গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ছড়িয়ে পড়েছে ‘শিয়ালের’ আতঙ্ক। আক্রমণ থেকে বাঁচতে লাঠি হাতে চলাফেরা করছেন স্থানীয়রা। শুরুতে উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালুকজামিরা গ্রামে আক্রমণের ঘটনা ঘটলেও তা ছড়িয়ে পড়ছে পাশের গ্রাম এলাকায়।
ইউনিয়নের তালুক কেঁওয়াবাড়ি, হরিনাথপুর, কিশামত কেঁওয়াবাড়ি, খামার বালুয়া ও দুলালেরভিটা গ্রামে আতঙ্কে দিন পার করছেন স্থানীয়রা।
গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত গত চার দিনে নতুন করে আক্রমণের শিকার হয়েছেন আরও তিনজন।
তাঁরা হলেন কিশামত কেঁওয়াবাড়ি গ্রামের আফসার আলী (৫০), খামার বালুয়া গ্রামের আব্দুল হালিম (৪৫) ও দুলালেরভিটা গ্রামের সাব্বির শেখ (৫২)। মাঠে কৃষি কাজ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন তাঁরা। এরপর থেকে কৃষকেরা মাঠে কাজে যেতে আরও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
এর আগে আক্রান্তদের মধ্যে আমিরুল, হামিদ মিয়া, আফছার আলী, সুমি বেগম, মনজিলা বেগম, পারভিন বেগম, শেফালি বেগম, মুক্তা বেগমের নাম জানা গেলেও এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ২০ জন ছাড়িয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
আক্রমণকারী প্রাণীটি শিয়াল বলে ধারণা করা হলেও আক্রান্তদের ভাষ্যমতে, প্রাণীটি দেখতে কুকুর কিংবা শিয়ালের মতো। মাথা ও লেজ আকারে বড়। শরীরে রয়েছে ডোরাকাটা দাগ। সুযোগ পেলেই এলাকার ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, ধানের জমি থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণ করছে জন্তুটি। হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড় বসিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এমন হামলার ঘটনা।
শনিবার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বের হলেও লাঠি হাতে বের হচ্ছেন।
পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, যে সব গ্রামে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। আতঙ্ক কাটাতে গ্রামে গ্রামে পুলিশ টহল দিচ্ছে।
হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রাকিব হোসেন জানান, এটা মেছবাঘ কিংবা শিয়াল হতে পারে। তালুকজামিরাসহ অন্যান্য গ্রামে পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।
পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আলতাব হোসেন জানান, মূলত শিয়ালের আক্রমণে মানুষ হতাহত হচ্ছেন। মানুষ বা গবাদিপশু যেই আক্রমণে শিকার হচ্ছে তাঁকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা দিতে হবে।
ইউএনও কামরুজ্জামান নয়ন বলেন, প্রাথমিকভাবে জন্তুটি শিয়াল বলে ধারণা করা হলেও নিশ্চিত হওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে।