বিয়ানীবাজার পৌর শহরের কসবা এলাকার আফিয়া বেগম। কন্যা শিশু জন্ম দেওয়ার পর নানাভাবে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সেসব দিনের কথা চিন্তা করে আজও তাঁর চোখে জল আসে। সে শিশু আজ স্নাতকে পড়ছেন। এখন সেই মেয়েকে নিয়েই পরিবারের সবাই স্বপ্ন দেখেন।
একসময় কন্যা শিশুর জন্ম হলে পরিবারের সদস্যরা মুখ গোমড়া করতেন। কোনো নারী একাধিক কন্যা শিশু জন্ম দিলে স্বামীর পরিবারের সদস্যরাসহ সমাজের লোকজনও নানা কথা শোনাতেন।
এখন সময় বদলেছে। কন্যা শিশু এখন প্রতিটি পরিবারে আশীর্বাদ হয়ে জন্ম নিচ্ছে। বিয়ানীবাজার উপজেলায় কন্যা শিশু নিয়ে অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গিও বদলেছে। তবে সারা দেশে কন্যাশিশুর নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত তাঁরা।
বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সদস্য আব্দুল মালিক বলেন, ‘তিন মেয়েসন্তান জন্ম দিয়েও আমি এক গর্বিত পিতা। আমার মেয়েরা সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, সন্তানকে সঠিক পরিবেশ দিয়ে প্রকৃত মানুষ করে তুলতে পারছেন কি না—সেটাই বড় কথা।’
উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুকসানা বেগম লিমা বলেন, মেয়েরা এখনো কোনো জায়গাতেই নিরাপদ না। পরিবারে সমান সুযোগ পেয়ে সে বড় হয় না। সেটা যত ধনী পরিবারই হোক বা যত দরিদ্র পরিবারই হোক। তবে বিয়ানীবাজারের প্রেক্ষাপটটা ভিন্ন।
বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি সজীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের সমাজে পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতি ভয়াবহ বিদ্যমান। আমরা এখনো নারীর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। নারীদের সম্মান করার জায়গাটা এখনো তৈরি করতে পারিনি। এ জন্য আইনের পাশাপাশি পরিবারকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।’
পৌর মেয়র মো. আব্দুস শুকুর বলেন, বিয়ানীবাজার এলাকায় কন্যা শিশু নিয়ে মনোভাব কিছুটা বদলালেও সারা দেশে কন্যাশিশুরা এখনো নিরাপত্তাহীন।