দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য ভিজিএফের বরাদ্দের চাল পরিমাপে কম করে দিয়ে বেচে যাওয়াগুলো চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোকজন ও দলীয় কর্মীদের মধ্যে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্য ও চাল কম পাওয়া ব্যক্তিদের কাছে থেকে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের এক হাজার ৫০২টি পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত বুধবার সকাল ১০টায় চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। চাল নেওয়ার পর ওজনে কম দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপকারভোগীরা বিতরণ এলাকায় বিক্ষোভ করতে থাকেন।
চাল পাওয়া সান্দিড়া গ্রামের রত্না হালদার, মৈমিতা; পানলা গ্রামের রীনা বেগমসহ ১০ থেকে ১৫ জন দোকানে নিয়ে চাল মাপেন। ওজনে ১০ কেজির বদলে প্রত্যেকের চালের ওজন আট কেজি থেকে সাড়ে আট কেজি পাওয়া যায়।
পানলা গ্রামের রীনা বেগম বলেন, ‘আমি চাল কম পাওয়ার বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বলেছেন, “আমি ১০ কেজি নয়, ৫ কেজি করে চাল দেব, কারও কিছু করার থাকলে করতে পারে।’”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পরিষদের কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান চাল বিতরণে তাঁদের না রেখে তাঁর দলীয় নেতা-কর্মী ও গ্রামের আত্মীয়স্বজনকে রেখেছেন।
আরেক ইউপি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাল কম করে দেওয়ার কারণে বিতরণের পর অনেক বস্তা চাল বেচে যায়। ওই চাল চেয়ারম্যান তাঁর ভাই নয়ন হোসেন, নির্বাচনী কর্মী ফারুক হোসেন ও ভাইয়ের শ্বশুর আব্দুল জব্বারের মাধ্যমে নির্বাচনে কাজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ কেজি করে দিয়ে দেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আমিনূল ইসলাম বরাদ্দের চাল বেচে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওই চাল দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে কী পরিমাণ চাল কতজনের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে, সেটা তিনি বলতে পারেননি। কোনো তালিকা তাঁর কাছে নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।