হোম > ছাপা সংস্করণ

যে যেভাবে পারছে দাম বাড়াচ্ছে

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

বেনাপোল থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৪৩৭ কিলোমিটার। এই ৪৩৭ কিলোমিটার পথ যেতে একটি ট্রাক অথবা কাভার্ড ভ্যানের তেল খরচ হয় ১১০ থেকে ১১৫ লিটার। লিটারপ্রতি ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়ায় এই রুটে একটি ট্রাকের তেল খরচ বেড়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। অথচ এই পথে ট্রাকভাড়া ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। আবার পরিবহন খরচ যতটুকু বেড়েছে পণ্যের দাম তার চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থা দেশের অন্যতম খাদ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে।

খাতুনগঞ্জের একাধিক আড়তদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে বেনাপোল থেকে চট্টগ্রামে মালামাল পরিবহনে যে ট্রাকের ভাড়া ছিল ২৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা, এখন সেখানে প্রতি ট্রাকের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৩৭ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের ওজন স্কেলের কারণে এসব ট্রাকে ১৩ টন মালামাল পরিবহন করা হয়। এ হিসাবে ১৩ হাজার কেজি মালামাল পরিবহনে খরচ বেড়েছে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা। অর্থাৎ পেঁয়াজ, শুকনো মরিচসহ যেসব পণ্য ভারত থেকে ওই স্থলবন্দর দিয়ে আনা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেসব পণ্যে প্রতি কেজির বিপরীতে ভাড়া বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ পয়সা। এই পরিবহন খরচ বৃদ্ধির বিপরীতে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা।

এক সপ্তাহ আগে খাতুনগঞ্জে ভারতীয় নাসিক জাতের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। গতকাল বুধবার সেই পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়। অন্যদিকে ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে গত পাঁচ দিনেই শুকনো মরিচের দাম বাড়ানো হয়েছে কেজিতে ৪০ টাকা। খাতুনগঞ্জে এখন প্রতি কেজি শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ টাকায়।

চিনি, ছোলা, ডালসহ আমদানি করা পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খাতুনগঞ্জে আনার ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ বেড়েছে ৫০০ টাকা। আগে বন্দর থেকে খাতুনগঞ্জে পণ্য আনতে প্রতি ট্রাকের ভাড়া ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। এখন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। পটিয়া থেকে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকা। কিন্তু খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এসব পণ্যের দাম কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ৫ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্যে। কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দাম বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জে এখন ভালো মানের (চিকন) প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৪ টাকায়, মাঝারি মানের মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা এবং মোটা মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৩ টাকায়। ভালো মানের প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকায়। মোটর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৩ টাকায়। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৯ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি কেজি গম বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকায়।

মসলাজাতীয় পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি ভারতীয় জিরা ৪৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪৫ টাকা। ১০০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ভালো মানের এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ টাকায়, মাঝারি মানের এলাচ ১ হাজার ৪০০ টাকায় এবং ২০০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় এখন সব পণ্যের দামই বাড়ছে। পণ্যভেদে কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে।

মূল্যবৃদ্ধির জন্য পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাত দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগে যে ট্রাকের ভাড়া ১০ হাজার টাকা ছিল, সেখানে এখন পরিবহনের মালিকেরা নিচ্ছেন ১৫ হাজার টাকা। ৩০ হাজার টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ৪০ হাজার টাকা। পরিবহনের মালিকেরা তেলের পেছনে বাড়তি যেই টাকা খরচ হয়, তার চেয়ে বেশি ভাড়া বাড়িয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সরকার কোনো ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়নি। পণ্যের মালিকের সঙ্গে দরদাম করেই মালামাল পরিবহন করা হয়। এ ক্ষেত্রে যখন স্ট্যান্ডে ট্রাক বেশি থাকে পণ্য কম থাকে তখন ভাড়া কম হয়। আবার ট্রাক কম থাকলে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ