মায়ের দেওয়া কিডনিতে সুস্থ জীবন পেল কিশোরী শ্রাবণী। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে মায়ের দেওয়া একটি কিডনি মেয়ের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। মেয়ের দেহে মায়ের কিডনি প্রতিস্থাপন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এটিই প্রথম। বরাবরের মতো এ কিডনি প্রতিস্থাপনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল। এ কাজে অংশ নেন আরও ৩১ জন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৭ বছরের শ্রাবণী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির অকার্যকারিতাজনিত অসুস্থতায় ভুগছিল। মেয়ের সুস্থতার জন্য মা মনোয়ারা বেগম (৪৫) নিজের একটি কিডনি দান করতে সম্মতি দেন। সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১ আগস্ট বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় হাসপাতালের এই কিডনিদাতা ও গ্রহীতার ছাড়পত্র প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের রোগী যেন দেশের বাইরে না যায়, সে লক্ষ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় ও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল কাজ করছে। দেশের মানুষ বিশেষ করে কিডনি, লিভার, কর্নিয়া ট্রান্সপ্লান্টের জন্য বিদেশে যায়। এ ছাড়া ক্যানসার, ইনফার্টিলিটি, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট, আর্থোস্কপিক, স্টেমসেল থেরাপি, রোবটিক সার্জারি, বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট, হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করতেও দেশের বাইরে যায়। আমরা এসব চিকিৎসা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে শুরু করতে চাই।’
অধ্যাপক শারফুদ্দিন বলেন, ‘আজকে আমাদের অন্য রকম একটি দিন। আমাদের সামনে কিডনিদাতা মা ও কিডনিগ্রহীতা মেয়ে হাসিমুখে বসে আছেন। এমন হাসিমাখা মুখ সব রোগীর ক্ষেত্রে আমরা দেখতে চাই।’
অনুষ্ঠানে কিডনিগ্রহীতা ও দাতাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও কেকে কেটে বিদায় জানানো হয়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাঁদের হাতে ওষুধও তুলে দেন উপাচার্য।