নুরনগরের ‘ফুট বাতাসা’ সাতক্ষীরার শ্যামনগরের নুরনগরের পরিচিত এক নাম। হরেক রকমের মিষ্টি আর মিঠাইয়ের যুগে এসেও এতটুকু আবেদন কমেনি এই বাতাসার।
বিশেষ এ মিষ্টির সঙ্গে পরিচিত জনেরা আজও সুযোগ পেলে সংগ্রহ করেন চিনি পানির মিশ্রণে তৈরি এ মিষ্টি। আপনজনদের খুশি নুরনগরের ঐতিহ্যে পরিণত হওয়া ফুট বাতাসা ভিন দেশেও পাঠিয়ে থাকেন অনেকে।
সুমিত্রা মিষ্টান্ন ভান্ডার নামের প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে গত আট দশকেরও বেশি সময় ধরে শ্যামনগরের নুরনগরের হালদার পরিবারের সদস্যরা বিশেষ ধরণের মিষ্টি হিসেবে ফুট বাতাসা বাজারজাত করছেন। ‘কার্তিক ময়রার দোকান’ হিসেবে পরিচিত এ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মূলত ফুট বাতাসা তৈরির কারণে এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ হয়েছে।
শিশুদের কাছে প্রিয় চ্যাপ্টা আকারের ৩-৪ সেন্টিমিটার গোলাকৃতির এ মিষ্টির মুসলিম সম্প্রদায়ের মিলাদসহ নানা অনুষ্ঠান আর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরের প্রসাদ হিসেবে এক সময়ে ব্যাপক ব্যবহার হতো। এমনকি রবীন্দ্রনাথের শুভদৃষ্টি গল্পে পর্যন্ত বিয়ের সম্বন্ধ গড়তে যাওয়ার সময় সঙ্গে বাতাসা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের মালিক মৃত্যুঞ্জয় হালাদার জানান, ৯৪ বছর বয়সে পিতা কার্তিক হালদারের মৃত্যুর পর ছোট দুভাই সঞ্জয় ও আনন্দকে নিয়ে তিনি ব্যবসার হাল ধরেছেন। ‘ঠাকুরদা বলরাম হালদারের সময় থেকে আমরা পারিবারিকভাবে ফুট বাতাসা তৈরি করছি’ উল্লেখ করে তিনি জানান বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাতাসা এলেও তাদের ফুট বাতাসার কদর এখনো আছে।
নকিপুর এইচসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, বাবা ও দাদার সময় থেকে নুরনগরের ফুট বাতাসার সঙ্গে পরিচয়। যার কারণে ভিন্ন এলাকায় হওয়া সত্ত্বেও মাঝেমধ্যে লোকজন পাঠিয়ে সেখানকার বাতাসা আনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা থাকে। বাজারের অন্য সব বাতাসার তুলনায় সেখানকার ফুট বাতাসা সুস্বাদু বলেও দাবি ওই প্রবীণ শিক্ষকের।