ঢাকা মহানগর এলাকায় ১২০টি কোম্পানির ছয় হাজার বাস চলাচল করে। এর মধ্যে ১৩টি কোম্পানির ১৯৬টি বাস চলে সিএনজিতে। বাকিগুলো চলে ডিজেলে। তবে দূরপাল্লার সব গাড়ি চলে ডিজেলে। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। যদিও এ হিসাব রাখার দায়িত্ব যাদের সেই বিআরটিএর কাছে এ ধরনের কোনো তথ্যই নেই।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘সিএনজি ও ডিজেলে চলা বাসের আলাদা হিসাব আমরা রাখি না। ভবিষ্যতে সেটা রাখা যায় কি না ভাবা হচ্ছে। তবে আমরা বাস মালিকদের নির্দেশ দিয়েছি সিএনজি ও ডিজেলচালিত বাস চিহ্নিত করার জন্য।’
সিটিং-গেটলক সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিক সমিতি। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে সব ধরনের সিটিং সার্ভিস এবং গেটলক সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী তিন দিনের মধ্যে ডিজেল ও সিএনজিচালিত বাসে স্টিকার লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেটা করার দায়িত্ব বিআরটিএর।
এদিকে বাসের বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধ করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে বিআরটিএর ১১টি টিম মাঠে কাজ করবে। বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালাবে। যেসব বাস বাড়তি ভাড়া আদায় করবে তাদের বিরুদ্ধে ওই টিম ব্যবস্থা নেবে। প্রতিটি বাসে ভাড়ার চার্ট থাকতে হবে। সিএনজি চালিত বাসে বাড়তি ভাড়া না আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছে মালিক সমিতি।
এদিকে ট্রাকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেছেন, তেলের দাম বেড়েছে কিন্তু ট্রাকের ভাড়া বাড়েনি। এ জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ট্রাকের ভাড়াও সমন্বয় করতে হবে। দেশে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ট্রাক চলে সিএনজিতে বাকি সব ডিজেলে বলে তিনি জানান।
শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে বাস মালিকদের উদ্দেশ্যে ওসমান আলী বলেন, বাসে যে হারে ভাড়া বাড়ান হয়েছে সেই হারে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সমন্বয় করা হোক। শুধু এক ক্ষেত্রে না সব ক্ষেত্রেই সমন্বয় করতে হবে।
অতিরিক্ত ভাড়ার বিরুদ্ধে অভিযান
বিআরটিএর ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে গতকাল সারা দিন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অন্যান্য অভিযোগে ২৯৬টি বাস ও মিনিবাসের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানে ২৪৪টি ডিজেল ও ৫২টি সিএনজি চালিত বাস ও মিনিবাস এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে তিন লাখ ৩৬ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।
এ ছাড়া, ঢাকা জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৮টি বাস ও মিনিবাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদায় হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা।