সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা তাঁতশিল্প এলাকায় নারীদের জীবিকা চলছে শাড়ির নকশার বাড়তি সুতা কেটে। কেউ অবসরে এ কাজ করেন। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে তাঁদের। সংসারে আসছে সচ্ছলতা। কাপড় কাটার কাজই হয়ে উঠেছে অসহায় নারীর জীবিকার অবলম্বন।
পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা এটিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কাঁচির ব্যবহারের মাধ্যমে চলছে তাঁদের সংসার।
বিভিন্ন নকশার কাপড়ের সুতার বাড়তি অংশ কাঁচি দিয়ে কেটে কাপড় ব্যবহার করার উপযোগী করে তোলেন এখানকার নারীরা।
জানা যায়, প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি শাড়ির কাপড় কাটেন নারীরা। আবার কাপড়ে নকশা কম থাকলে পাঁচ থেকে ছয়টি শাড়ির সুতাও কাটার সময় পান তাঁরা। প্রতিটি শাড়ি কাটতে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয় তাঁদের।
উপজেলার প্রতিটি গ্রামে পাঁচ শতাধিক নারী এ কাজে যুক্ত। কেউ বাড়ির কুঠিরে বসে অবসর সময়ে এ সুতা কাটার কাজে ব্যস্ত থাকেন। অনেকে আবার পেশা হিসেবে এই কাজ করেন। সাপ্তাহিক ও মাসিক চুক্তির মাধ্যমে মহাজনদের এই কাপড় কেটে দেন। আবার কেউ কেউ বার্ষিক হিসাবে এই কাজ করে থাকেন। কেউ সংসারের কাজের ফাঁকে আবার কেউ লেখাপড়ার পাশাপাশি এই কাজ করে বাড়তি আয় করছেন।
কাপড় কাটার কারিগর মিনা খাতুন বলেন, প্রায় চার বছর ধরে কাপড় কাটার সঙ্গে জড়িত আছেন। এ কাজ করে যা পান, তা দিয়ে ঘর-সংসারের কিছু খরচ ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালান তিনি।
আরেক কারিগর ফুয়ারা খাতুন বলেন, ‘ঘর-সংসারের কাজ সামলে অবসর সময়ে কাপড় কাটার কাজ করি। প্রতি সপ্তাহে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা উপার্জন করি। তা দিয়ে সংসারে খরচ করি।’
দুলালী রানী বলেন, ‘শাড়ির কাপড় কেটে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকার মতো আয় করে থাকি। অভাবের সংসারের দিনমজুর স্বামীর উপার্জনে সংসার চলে না, তাই ঘরে বসে দুই বছর ধরে কাপড় কাটার কাজ করছি।’
উপজেলার পৌর শেরনগর এলাকার তাঁত কারখানার মালিক দেলবার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন নারী আমার কারখানায় শাড়ি কাপড় কাটেন। এক সপ্তাহ পরপর প্রতিজন মজুরি নেন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা করে।’