নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় সবজির দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষকেরা। খুচরা বাজার থেকে অর্ধেকেরও কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে। তাই লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের খুচরা বাজারে সবজির দামের পার্থক্য কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা অল্প দামে কৃষকদের কাছ থেকে কিনে বেশি লাভে বিক্রি করছেন।
উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের কাছ থেকে সবজি কম দামে কিনে নিচ্ছেন পাইকারেরা। কিন্তু খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাথায় হাত বুলিয়ে লাভবান হচ্ছে ফড়িয়া ব্যাপারীরা। আর সাধারণ ক্রেতারা সবজি কিনতে গিয়ে হচ্ছেন দিশেহারা।
ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে খড়কমারা (সিএন্ডবি) পাইকারি বাজারে গতকাল শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায় বেগুন প্রকার ভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, কাঁকরোল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, জালি ১৫ থেকে ২০ টাকা পিছ, ঝিঙে ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি, ধুন্দুল ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি, ঢ্যাঁড়স ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি, করলা ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, শসা ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খড়কমারা বাজার থেকে ইটাখোলা গোল চত্বর বাজারের দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার। আর এই ৪ কিলোমিটার দূরেই কেজি প্রতি বিভিন্ন ধরনের সবজির দামের পার্থক্য কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। তবে ক্রেতারা বলছেন, মাঠ থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত সঠিকভাবে মনিটরিং না করার কারণেই বাজারের এই অস্থিরতা। বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন তারা
খড়কমারা গ্রামের কৃষক মাসুম ভূঁইয়া ও শাহজাহান বলেন, ‘আমরা প্রায় দুই বিঘা জমিতে বেগুন, জালি, করলা ও কাঁকরোল চাষ করেছি। আমাদের স্থানীয় বাজারে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারদের কাছে অল্প দামে বিক্রি করা লাগে বলে আমরা শহরে গিয়ে বিক্রি করেছি। এতে দামও পাই ভালো।’
পাইকারি ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিন ও মাসুম মিয়া বলেন, ‘আমরা কৃষকদের কাছ থেকে যে দামে সবজি কিনি সেই দাম বাড়ানোর কারসাজি করেন আড়তদার এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব সবজি কেনার ক্ষেত্রে ভাড়া এবং অন্য খরচ দিয়ে আমরা কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা লাভ করে থাকি। অনেক সময় লোকসানও গুনতে হয়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন সাদেক বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর। সবজি উৎপাদনও খুব ভালো হয়েছে। উৎপাদিত কৃষি পণ্য কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত বিক্রয়ের মধ্যে যে দামের যে পার্থক্য রয়েছে তা আগের থেকে অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে। কৃষকেরা যেন উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দাম পান সে জন্য কাজ করছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।