হারিয়ে যাচ্ছে মাগুরার শ্রীপুরের ঐতিহ্যবাহী হস্তচালিত তাঁতশিল্প। সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে যান্ত্রিক তাঁতশিল্প। এক সময় উপজেলার চন্দ্রপাড়া, জোকা, কালীনগর, রায়নগর, রামনগর, হাট শ্রীকোল, আমতৈল, মর্তুজাপুর, দারিয়াপুর, দাইরপোল, ইছাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় তাঁতশিল্পের কাজ হতো। এই শিল্পের যথেষ্ট কদরও ছিল।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে তাঁদের তৈরি কাপড়, লুঙ্গি, গামছা স্থানীয় হাটবাজার থেকে ক্রয় করতেন। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই শিল্পটি এখন বিলুপ্তপ্রায়। এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সহজ শর্তে ঋণের দাবি জানিয়েছেন তাঁতশিল্পীরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার আঁকড়ে ধরে আছে। লোকসানের ফলে এ শিল্পে জড়িত অনেকেই বিভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। কেউ আবার ভ্যান-রিকশা চালিয়ে ও দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
জোকা গ্রামের তাঁতশিল্পী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘বংশপরমপরায় আমরা তাঁতশিল্পে জড়িত। এখন আধুনিক কল-কারখানায় স্বল্প খরচে শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা তৈরি হয়। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কম দামে ভারতীয় কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। জিনিসের দাম ও শ্রম অনুযায়ী ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি না। আমার পর এই শিল্পকে ধরে রাখবে এমন কেউ আর পরিবারে নেই।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘উপজেলায় কামার-কুমোর, নাপিত, মুচি, বাঁশ ও বেতশিল্প, কাঁসা ও পিতলশিল্পে যাঁরা জড়িত, তাঁদের ৭৫ জনের একটি তালিকা করা হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই তালিকায় তাঁতশিল্পের কেউ নেই। তাঁদের বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হবে।’