হোম > ছাপা সংস্করণ

যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা

ড. মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

যুগপৎ আন্দোলনের তৃতীয় অভিজ্ঞতা বর্তমানে হতে যাচ্ছে। এবার জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে এত দিন লুকোচুরি খেললেও অঘোষিতভাবে বিএনপির ১০ 
ও ২৭ দফার সঙ্গেই আছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুগপৎ আন্দোলনের একটি ধারণা ও অভিজ্ঞতা এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে। এই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কখন, কতটা সুফল দিয়েছে, কতটা হতাশার সৃষ্টি করেছে, তার কোনো পোস্টমর্টেম না করেই কিছু কিছু রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনকে সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বেশির ভাগের মধ্যেই অতীত অভিজ্ঞতাকে অনেক সময় সরলীকরণ করার প্রবণতা রয়েছে। আন্দোলনরত দলগুলোর নিজেদের জোট ও দলের সংখ্যাতাত্ত্বিক বিস্তৃতি দেখিয়ে ক্ষমতাসীনদের জনবিচ্ছিন্ন দেখানোর কৌশল হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
 
বিদেশিদেরও এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। সে কারণে যুগপৎ আন্দোলনকে এখন বিরোধীপক্ষ সরকারবিরোধী যেকোনো আন্দোলনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কিংবা লাভজনক উপায় হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু রাজনীতিতে দেখার বিষয় হচ্ছে, সরকার পরিবর্তনের ফলাফল কতটা জনগণের কল্যাণে পরবর্তী সময়ে ভূমিকা রাখবে, তা বিবেচনা করা। রাজনীতিবিদেরা তা কতটা বিবেচনা করেন, সেটি ভিন্ন প্রশ্ন।
 
রাজনীতিসচেতন সবার মনে হয় এখন সময় এসেছে যুগপৎ আন্দোলনের অতীত অভিজ্ঞতার একটি পোস্টমর্টেম করে দেখার। তাহলেই এখন দেশে সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য নামসর্বস্ব নানা দলের জোট গঠন এবং সরকার পতনের আন্দোলনের ফলাফল সম্পর্কে একটি যথার্থ রাজনৈতিক ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
 
আশির দশকে সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো ১৫ দলীয় ঐক্যজোট গঠন করে। এটিকে অনুসরণ করে বিএনপির নেতৃত্বে সাতদলীয় জোট গঠিত হয়। এই জোটের দলগুলো ছিল মূলত মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী এবং আওয়ামীবিরোধী। জামায়াতে ইসলামীও এর সঙ্গে ছিল। একটি পর্যায়ে এসে ১৫ দলীয় জোটের মধ্যে কয়েকটি বাম ঘরানার দল আলাদা হয়ে পাঁচদলীয় আরেকটি জোট গঠন করে, তবে সিপিবি ও ন্যাপ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই ছিল। এর ফলে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তিনটি জোট প্রথমে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে থেকে দাবি ও কর্মসূচি প্রদান করলেও একটি পর্যায়ে এসে তিন জোটের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল যে এরশাদ সরকারের পতনের জন্য তাদের ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। সেখান থেকেই যুগপৎ আন্দোলনের ধারণা তৈরি হয়। এই আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিন জোটের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটি নামক একটি ছোট সমন্বয়ক শক্তি তৈরি করা হয়। লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা রাজপথের কর্মসূচি প্রদানের ক্ষেত্রে নিজ নিজ জোটের মতামত ও কর্মসূচির সমন্বয় সাধন করতেন। এভাবেই যুগপৎ আন্দোলন একসময় রাজপথের কর্মসূচিতে তিন জোটকে প্রায় একই কাতারে নিয়ে আসে, যা সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর বিরোধী শক্তি হিসেবে মাঠে ভূমিকা রাখে। এরশাদ সরকার একপর্যায়ে বেশ একঘরে হয়ে পড়ে। এরশাদ সরকারের পতনের একটি মাত্র লক্ষ্যেই তিন জোট একমত হয়েছিল এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগঠিত করছিল। কিন্তু তিন জোটের মধ্যে আদর্শগত অবস্থান ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। আট ও পাঁচ দলের মধ্যে আদর্শগত দূরত্বের চেয়ে ব্যক্তিত্বের বিরোধই ছিল প্রধান। এ দুই জোটই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ব্যাপারে একমত পোষণ করত। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন সাতদলীয় ঐক্যজোট ছিল আট ও পাঁচদলীয় জোটের সম্পূর্ণ বিপরীত মতাদর্শী। এ ধরনের পরস্পরবিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক জোটের যুগপৎ আন্দোলনের ফলে সরকারের পতন ঘটলেও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র ও রাজনীতির মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে গোড়াতে সুস্পষ্ট কোনো ভাবনা-চিন্তা ছিল বলে মনে হয় না।
 
অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকেই শুধু দুর্বল ছিল না, বিএনপির অনেক সাবেক নেতাই সে সময় জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিল, বিএনপির অনেক নেতার অবস্থানও ছিল দোদুল্যমান। ফলে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে বিএনপির অবস্থান আট ও পাঁচ দলের চেয়ে অনেক দুর্বল ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ যাতে এই আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে না পারে, সে ব্যাপারে তারাসহ সাতদলীয় জোটের দলগুলো ছিল সচেতন ও কৌশলী। তারা যুগপৎ আন্দোলনের সময়ই কর্মসূচির ক্ষেত্রে জনমত বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছিল, তার একটি হলো ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচন আকস্মিকভাবে বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া, যার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার ‘আপসহীন’ ভাবমূর্তি জনমানসে তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ফলে যুগপৎ আন্দোলনে ছেদ পড়ে, মিডিয়া ক্যু ঘটিয়ে সংসদ নির্বাচনে এরশাদ সরকার তার আধিপত্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়। অথচ কমরেড ফরহাদের তত্ত্ব অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ১৫০ ও খালেদা জিয়াকে ১৫০ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হলে বিএনপি তা লুফে নিয়েছিল। কিন্তু এরশাদ সরকার তাৎক্ষণিকভাবে সংবিধানের সেই বিধান সংশোধন করে একজন প্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ আসনে নির্বাচনের বিধি সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করলে বিএনপি এরশাদের অধীনে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেয়। বিএনপির এই দ্বৈত নীতি ছিল মূলতই তাদের সুদূরপ্রসারী গোপন পরিকল্পনার অংশবিশেষ। এর ফলে বিএনপি কর্তৃক খালেদা জিয়াকে ‘আপসহীন’ নেত্রী হিসেবে জনমনে প্রতিষ্ঠার গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে জনগণকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ফিরিয়ে আনার জন্য আওয়ামী লীগসহ বিরোধীদলীয় সদস্যরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে ১৯৮৭ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সংসদ ভেঙে দেন। ফলে ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তিন জোট উক্ত দলগুলো নির্বাচন বর্জন করে। নির্বাচনে অংশ নিতে সরকার আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে সম্মিলিত বিরোধী জোট, নবগঠিত ২৩ দলীয় জোট, ফ্রিডম পার্টি, জাসদ (সিরাজ), খিলাফত আন্দোলন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সুযোগ করে দেয়। আ স ম আবদুর রব উক্ত সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০-এর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিনদলীয় জোটের যুগপৎ আন্দোলনে জোয়ার-ভাটা বিরাজ করে। সেপ্টেম্বরের পর থেকে আট ও পাঁচ দল তিন জোটের রূপরেখার ভিত্তিতে আন্দোলন পুনরায় সংগঠিত করার উদ্যোগ নিলে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ তাতে জোরালো সমর্থন জানায়। এর ধারাবাহিকতায় পান্থপথের জনসভায় শেখ হাসিনা তিন জোটের যৌথ রূপরেখা প্রথম প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন। তিন জোটের পক্ষ থেকে তাতে সম্মতি ও স্বাক্ষর দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলন বেগবান হলে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকার পদত্যাগ করে এবং তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই তিন জোটের রূপরেখা লঙ্ঘিত হতে থাকে। নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি, ভারতবিরোধিতা, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গোপন আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংসদে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে এবং জামায়াত বিএনপিকে সরকার গঠনে সমর্থন দেয়। এর মধ্য দিয়ে ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলে নিতে সক্ষম হয়। এর প্রধান কারণসমূহ হচ্ছে—পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার, ভারত ও আওয়ামীবিরোধিতা, ’৭২-৭৫ নিয়ে অপপ্রচার, নির্বাচনে আট ও পাঁচদলীয় জোটের অতি আত্মবিশ্বাস এবং ঐকমত্যের প্রার্থী নির্বাচনে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত।
 
যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা হয় ১৯৯৫-৯৬ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সব বিরোধী দলের সদস্যরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এই ইস্যুতে রাজনৈতিক কৃতিত্বলাভের আশায় জামায়াতও পদত্যাগ করে বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। রাজপথে আন্দোলন শুরু হলে জামায়াতও যুগপৎ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। ফলে বিএনপি একঘরে হয়ে যায়। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি শুধু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দ্বারা গঠিত ফ্রিডম পার্টিকে পাশে পায়। জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে লাভবান হওয়ার আশা করেছিল। তবে এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সচেতনভাবেই জামায়াত থেকে নিজেকে দূরে রেখে এককভাবে নির্বাচন করেছিল। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
 
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় ও সরকার গঠনের প্রধান কারণ ছিল যুগপৎ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের প্রায় একক নেতৃত্ব প্রদানের প্রতি ব্যাপক মানুষের সমর্থন। অন্যদিকে মাগুরা থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত সচেতন ভোটারদের উল্লেখযোগ্য অংশ বিএনপির প্রতি আস্থা হারায়। জামায়াত যুগপৎ আন্দোলন করেও তাদের সাম্প্রদায়িক চরিত্র এবং বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্নতার কারণে নির্বাচনে ভরাডুবির শিকার হয়।
 
যুগপৎ আন্দোলনের তৃতীয় অভিজ্ঞতা বর্তমানে হতে যাচ্ছে। এবার জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে এত দিন লুকোচুরি খেললেও অঘোষিতভাবে বিএনপির ১০ ও ২৭ দফার সঙ্গেই আছে। জামায়াত ও বিএনপি এবার নতুন কৌশলে জোটের সংখ্যা বাড়াচ্ছে, কিছু ভুঁইফোড়, নাম-পরিচয়হীন প্যাডসর্বস্ব দলের নাম ব্যবহার করে নতুন নতুন জোট তৈরি করে সংখ্যার প্রসার ও প্রচার চালানো হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দল ও জোটের সংখ্যার ব্যাপকতা দেখানো, বিদেশিদের সরকারবিরোধী জনমত ও জোটের বিশালতা দেখিয়ে বিভ্রান্ত করা। বেশির ভাগ নামসর্বস্ব দল ও ব্যক্তির নাম মানুষের কাছে অজানা, তাদের জোটসমূহের নামকরণে গণতান্ত্রিক, বাম গণতান্ত্রিক ইত্যাদি অসাম্প্রদায়িক পরিচয় ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু এসব জোট বা দলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হচ্ছে আওয়ামী লীগকে সরানো, রাষ্ট্র মেরামত তত্ত্বের আড়ালে বাংলাদেশকে জামায়াত-বিএনপির সাম্প্রদায়িক আদর্শে ফিরিয়ে নেওয়া। এতে করে এবারের যুগপৎ আন্দোলন প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির দেশ গঠন ও উন্নয়নমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতায় আচ্ছন্ন, জাতীয় বিভেদ সৃষ্টিকারী এবং নামসর্বস্ব কতিপয় ক্ষমতালোভী দলের রাজনৈতিক লড়াইয়ে পরিণত হতে যাচ্ছে।
 
লেখক: ড. মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ