গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রচারের নৌকায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানারও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে নোহালি ইউনিয়নের পূর্ব কচুয়া বাঁধের পাড় এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলামের বাড়ির সামনে অগ্নিসংযোগের এ ঘটনা ঘটে।
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে দুর্বৃত্তরা এ ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ভোটাররা। এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার রাত থেকেই এলাকায় পুলিশি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, পূর্ব কচুয়া বাঁধের পাড় এলাকায় পড়ে আছে আগুন দেওয়া নৌকাটি। মাঝখানের অনেকটা অংশ পুড়ে গেছে। ভেঙে ফেলা হয়েছে নৌকার অবকাঠামোও।
স্থানীয় বাসিন্দা নার্গিস বেগম জানান, রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা। রাত ২টার দিকে রাস্তার মাঝখানে আগুন জ্বলতে দেখে বাড়ির বাইরে আসেন। নৌকার মাঝখানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন। এ সময় কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম বাচ্চু বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এলাকার লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাইরে এসে দেখি নৌকায় আগুন লেগেছে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে আগুন নিভিয়ে নৌকাটি রাস্তার মাঝ থেকে সরিয়ে রাখে। এর পর থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাহারা বসিয়েছে।’
স্থানীয় মোহাসিন আলী বলেন, কয়েক দিন আগে পাশের এলাকায় নৌকা ও লাঙল মার্কার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ ধরনের সহিংসতা এড়াতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তিনি।
নোহালী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা মার্কার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ টিটুল এ বিষয় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি আমাকে সহিংসতা শেখায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌকায় যাঁরা আগুন দিয়েছে তাঁদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার জানান, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে গঙ্গাচড়া মডেল থানা-পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে বলে জানান ওসি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আবতাবুজ্জামান বলেন, ‘অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’
স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, ভোটগ্রহণের দিন যত ঘনিয়ে আসছে উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনাও তত বাড়ছে। লাঙল ও নৌকা মার্কার প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা সভায় প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মানার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু কেউ মানছেন না। এ নিয়ে বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটাররা।