হিজরি মাস রমজান আসতে এখনো প্রায় দুই মাস বাকি। এরই মধ্যে বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গত দুই দিনে হঠাৎ চিনির বাজারে নতুন করে দাম বেড়েছে। কেজিপ্রতি পাইকারি পর্যায়ে দুই টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চিনির দাম। মিল থেকে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ হচ্ছে না বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি চিনি ব্যবসায়ীরা জানান, গত শনিবার সকালে তাঁদের বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৭১ থেকে ৭১ টাকা ৫০ পয়সা। বিকেলে দাম বেড়ে বিক্রি হয় ৭৩ থেকে ৭৩ টাকা ৫০ পয়সা। গতকাল রোববারও চড়া দামে বিক্রি হয়েছে। নয়াবাজারের মেসার্স কালাম স্টোরের মালিক আবুল কালাম জানান, দুই দিন আগেও তিনি প্রতি কেজি চিনি ৭৫-৭৭ টাকায় বিক্রি করেছেন। গতকাল রোববার তা ৭৮-৮০ টাকায় বিক্রি করেন। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় তাঁরাও বাড়তি দামে বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে মৌলভীবাজারের পাইকারি চিনি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, মিল থেকে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। গত দুই দিন মিলের দামও তাঁদের জানানো হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে দাম বেড়ে যাচ্ছে। এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আসন্ন রমজানে চিনির দাম ১০০ টাকা হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
চিনির দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি সৈয়দ বশির উদ্দিন বলেন, অনেক মিল অগ্রিম চিনি বিক্রি করেও তা সরবরাহ করছে না। আর এ কারণে বাজারে দাম বাড়তির দিকে। তবে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, তাঁদের মিলে চিনির কোনো সংকট নেই। দৈনিক তিন হাজার থেকে তিন হাজার ৫০০ টন চিনি সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ সুযোগ নিতে চাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক নিউজ পোর্টাল ইনডেক্স মুন্ডি ডটকম সূত্রে গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৩৯ সেন্ট। আর আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছিল ৪৩ সেন্ট। তবে অক্টোবরে ১ সেন্ট কমে ৪২ সেন্টে বিক্রি হয়। তবে নভেম্বরে আবার ৪৩ সেন্ট হয়। অর্থাৎ গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম স্থিতিশীল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, রমজানে যাতে চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অচিরেই দেশের আমদানিকারকদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।