হোম > ছাপা সংস্করণ

বরফের নিচে মাছের রাজ্য

যেদিকে চোখ যায় সাদা আর সাদা। কোথাও বরফের স্তূপ, কোথাও বরফ গলা পানি। অ্যান্টার্কটিকার বরফে ঢাকা এমনই এক সাগর ওয়েডেল। ওয়েডেলের সেই বরফজলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিচ্ছিল জার্মান একটি জাহাজ। মেরু অঞ্চলের রহস্যের সন্ধান করতে ‘পোলারস্টার্ন’ নামক এ জাহাজে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন একদল গবেষক। অ্যান্টার্কটিকার এই সাগরের তলদেশে বৈচিত্র্যের খোঁজে গাড়ির মতো ক্যামেরা ব্যবহার করছিলেন তাঁরা। জাহাজ থেকে আধা কিলোমিটার নিচে পাঠানো হয় ক্যামেরাটি। এরপর পাওয়া ছবি দেখে রীতিমতো আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো অবস্থা হয় তাঁদের। কর্দমাক্ত সমুদ্রতলে পাথরের বৃত্তের মতো দেখতে মাছের বিচরণ। একটি নয়, অনেক। এরপর আরও চারটি ক্যামেরা পাঠিয়ে তুলে আনা হয় ওয়েডেল সাগরের নিচের আসল চিত্র। বিশ্ববাসীর সামনে উন্মুক্ত হয় অবিশ্বাস্য এক অধ্যায়। এ যেন বরফের নিচে মাছের রাজ্য।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুঁজে পাওয়া ওই রাজ্যটি আসলে আইসফিশের। সেখানে পাওয়া গেছে ৬ কোটি আইসফিশের আবাস। ওই জায়গার আয়তন ইউরোপের দেশ মাল্টার সমান। এর আগে কখনো সমুদ্রের নিচে এত বড় বাস্তুতন্ত্র পাওয়া যায়নি। প্রাণী এবং জায়গার দিক থেকেও এটি আলাদা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

আইসফিশের বৈজ্ঞানিক নাম Neopagetopsis ionah। এদের খুলি দেখতে বেশ স্বচ্ছ। মাথার প্রায় সবকিছুই দেখা যায়। জীববিজ্ঞানে একটি বিশেষ জায়গা দখল করে আছে এ মাছ। কেননা, আইসফিশই একমাত্র মেরুদণ্ডী প্রাণী, যাদের দেহে লোহিত রক্তকণিকা নেই। এত কম তাপমাত্রায়ও এদের রক্ত জমাট বাঁধে না। খুব কম তাপমাত্রায় বেঁচে থাকার জন্য অভাবনীয় অভিযোজন ক্ষমতা রয়েছে এ মাছের। এদের দেহে থাকা স্বচ্ছ রক্তে একটি জমাট প্রতিরোধী প্রোটিন তৈরি হয়, যা বরফের ক্রিস্টাল তৈরিতে বাধা দেয়।

গবেষক দলের প্রধান জার্মানির ব্রেমারহেভেনের আলফ্রেড ওয়েজিনার ইনস্টিটিউটের গবেষক অতুন পারসার বলেন, ‘যেদিকে তাকাই, খালি মাছ আর মাছ। চার ঘণ্টা ধরে আমরা ৬ কিলোমিটার এলাকায় ঘুরে শুধু মাছই পেয়েছি। দূর থেকে মনে হবে, একেকটা পাখি একের পর এক বাসা বানিয়ে রেখেছে। আমার জীবনে এই প্রথম এমন দৃশ্য দেখলাম।’

মোট ২৪০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে ছিল এ প্রজনন ক্ষেত্র। প্রতিটি আবাস গড়ে ৩ বর্গমিটার জায়গা দখল করে আছে। এমন প্রায় ৬ কোটি আবাস রয়েছে বলে জানায় দলটি। প্রতিটি আবাস ১৫ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি) গভীর এবং এদের ব্যাস ৭৫ সেন্টিমিটার। একেকটিতে গড়ে আনুমানিক ১ হাজার ৭৩৫টি ডিম রয়েছে। প্রতিটি দলে রয়েছে ‘রক্ষক’ মাছ। তবে কয়েকটি আবাসে কেবল ডিমই পাওয়া গেছে। খালি পড়ে আছে কয়েকটি। প্রজননক্ষেত্র হিসেবে অ্যান্টার্কটিকার সবচেয়ে উষ্ণতম এলাকাটাই বেছে নিয়েছে মাছগুলো। অন্যান্য জায়গা থেকে এদের আবাসে পানির তাপমাত্রা ছিল ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

কত দিন এ ডিমগুলো থাকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে গবেষকেরা জানান, এক মাস ডিম দেখাশোনা করে বয়স্ক মাছ। সেটি পুরুষ কিংবা নারী দুই-ই হতে পারে। তাঁরা বলেছেন, আইসফিশকে প্রতিনিয়ত নজরে রাখছে দুটি উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা। শিগগির আরও নতুন কিছু খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ