দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। সারা দেশের মতো রাউজানেও পূর্ণোদ্যমে চলছে পূজার প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষের দিকে। প্রতিমাকে রংতুলিতে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। এ ব্যস্ততা শুধু প্রতিমা তৈরির নয়, অমল-সুজন-সুশান্তদের এ ব্যস্ততা করোনার ক্ষত সারানোরও।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের দম ফেলার ফুরসত নেই। প্রতিমালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় নব রূপ পাচ্ছেন দেবী দুর্গা। একই সঙ্গে চলছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমায় হাতের শেষ ছোঁয়া। নানা রঙে দৃষ্টিনন্দন সাজে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে প্রতিমাগুলোকে। উৎসুক দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন এসব প্রতিমা তৈরির কারখানায়।
মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ শেষ। দিন-রাত কাজ চলছে। বাকি পাঁচ ভাগ কাজ তিন-চার দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর অর্ডার অনুযায়ী বুঝিয়ে দেওয়া হবে প্রতিমা। গত বছর করোনায় যে ক্ষতি হয়েছে, এবার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
রাউজান উপজেলায় এবার ২৩৬টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। রাউজানের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের ২৩৬টি মণ্ডপের স্থানগুলো পরিদর্শন করেছে পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা। প্রস্তুতি শেষে আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণের মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। ১২ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১৩ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ১৪ অক্টোবর মহানবমী শেষে ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জন করা হবে। এরই মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন দে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পূজার উৎসব পালন করা হবে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য পূজা মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক দল থাকবে। তদারকি করা হবে সব কার্যক্রম। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পূজার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব। ইতিমধ্যে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
পূজার সময়ে সার্বক্ষণিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন মাঠে থাকবে উল্লেখ করে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘পূজারিরা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে পূজা দিতে পারে, সে জন্য পুলিশ তদারকিতে থাকবে। আমরা পূজা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের জানিয়েছি, কোনো অবস্থায়ই বিশৃঙ্খলা মেনে নেওয়া হবে না। কোনো মাদকাসক্ত পূজা মণ্ডপে থাকতে পারবে না।’