তিন দিন পর নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারে কর্মব্যস্ততা ফিরেছে অভয়নগরের নওয়াপাড়া নৌ বন্দরে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা পুনরায় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস শুরু করেছেন।
শ্রমিকদের হয়রানি, বন্দরের অব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নওয়াপাড়া নদী বন্দরের নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয় গত শনিবার প্রথম প্রহর থেকে। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে শুক্রবার এই ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে পণ্য ওঠানো–নামানো বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। ধর্মঘট আহ্বানের প্রায় তিন দিনের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, নওয়াপাড়া নৌবন্দরে টার্নিং পয়েন্ট না থাকা, জেটিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া, নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জাহাজের মালের সার্ভের অব্যবস্থাপনা এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সব ধরনের শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন কারণে এই ধর্মঘট পালন করা হয়।
নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহারে করণীয় নিয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় ব্যবসায়ী ও জাহাজ মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে শ্রম অধিদপ্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া নওয়াপাড়া সার ও খাদ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ জালাল হোসেন বলেন, ‘বৈঠকে নৌযান শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সভায় ব্যবসায়ী সমিতি, মালিক সমিতি, নৌযান শ্রমিক সমিতি এবং নওয়াপাড়া হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে একটি ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি প্রতি মাসে একবার করে সভা করবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।’
ওয়াপাড়া হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফাল্গুন মণ্ডল বলেন, ‘অভয়নগরসহ আশপাশের উপজেলার প্রায় ২০ হাজার পুরুষ ও নারী শ্রমিক এই বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় তাঁরা বেকর হয়ে পড়েছিলেন। এখন বন্দর চালু হওয়ায় শ্রমিকেরা স্বস্তি পেয়েছে।’
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের মহাসচিব ওয়াহিদুরজ্জামান পল্টুর সভাপতিত্বে বৈঠকে নওয়াপাড়া সার ও খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি সরদার, সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন শ্রমিক সংঘটন, নৌযান শ্রমিক সংগঠন ও লঞ্চমালিক সমিতি এই বৈঠকে অংশ নেন।
মঙ্গলবার নৌবন্দর ঘুরে দেখা যায়, আগের মতো কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বন্দরে।