লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টাকা না দিলে পণ্য খালাসের ফাইলে স্বাক্ষর মেলে না, রাজস্ব পরিশোধের পরও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আর টাকা না দিলে করা হয় হয়রানি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘কিছুদিন ধরে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। স্টেশনে ডেপুটি কমিশনার না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী। ঘুষ না দিলে সরকারি বিধি-বিধান দেখিয়ে ফাইল আটক ও হয়রানি করা হয়।’
শুল্ক স্টেশনের সূত্র দাবি করেছে, রংপুর সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নামে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে ভুটান থেকে আনা জিপসাম, চুনাপাথর ও পাউডারে প্রতি টনে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বিধি মোতাবেক সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করার পরও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
এ ছাড়া পণ্য রপ্তানির গাড়ি থেকেও নেওয়া হয় টাকা, গাড়িতে ঘোষণার বেশি পণ্য আনা হলে জরিমানা করার নিয়ম আছে। কিন্তু তা না করে টাকা নিয়ে গাড়ি থেকে গাড়িতে লোড-আনলোডের সবুজ সংকেত দিচ্ছেন বলে একাধিক রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এতে কর্মকর্তাদের এমন কার্যকলাপে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এ বছর ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে সংশ্লিষ্ট সচেতন ব্যক্তিদের।
সম্প্রতি বুড়িমারী শুল্ক স্টেশনের ওপারে ভারতীয় চ্যাংরাবান্ধা শুল্ক স্টেশনের রপ্তানি ও আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাথরের রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দেন। এতে বাংলাদেশি আমদানিকারকেরা লোকসানের আশঙ্কায় পাথর আমদানি করছেন না। ফলে বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথর আসছে কম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত সপ্তাহে জিপসাম ও ডলোমাইড পাউডারের ট্রাক রাজস্ব কর্মকর্তারা কাগজে সমস্যা বলে আটক করেন। অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার পর গাড়িগুলো খালাসের ফাইলে স্বাক্ষর করেন।’
এ বিষয়ে রাজস্ব কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মিনা ও আবু তাহের মিয়া বলেন, ‘কাউকে কোনো ধরনের হয়রানি বা অনিয়ম করা হয় না। কে অভিযোগ করেছে নাম বলেন। জানামতে এ ধরনের কোনো সুযোগ নাই।’
বুড়িমারী শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার (অতিরিক্ত) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আপনি জানালেন। শুনলাম। আমি অন্যায়কারীকে ছাড় দেব না। সরকারি স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’