লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নির্মিত মহিলা মার্কেটগুলো এখনো দখলমুক্ত হয়নি। তিনটি মার্কেটের বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে চলছে বিশৃঙ্খলা। উপজেলা ও ইউনিয়ন বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির অধীনে এগুলো তদারক করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
জানা গেছে, শুধু নারী উদ্যোক্তাদের জন্য উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের হায়দরগঞ্জ বাজার এবং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট ও বাবুরহাট বাজারে তিনটি মহিলা মার্কেট চালু করা হয়। নারীদের তৈরি কুটিরশিল্পের পণ্য নারীদের দিয়েই বিপণন ও প্রদর্শন এবং তাদের স্ব-উদ্যোগী করার লক্ষ্যে সরকার মহিলা মার্কেটগুলো নির্মাণ করে।
তিনটি মহিলা মার্কেটের মধ্যে শুধু উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের হায়দরগঞ্জ বাজারের মার্কেটটি উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই বরাদ্দপত্রেরও কোনো কাগজপত্র ইউনিয়ন পরিষদে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই মার্কেটে কোনো নারী উদ্যোক্তার দোকানও নেই।
স্থানীয় দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা ও অনাগ্রহের সুযোগে মার্কেটগুলো দখল করে পুরুষেরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ ও ভূমি অফিস রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে ভাড়ার টাকার ১৫ শতাংশ দিয়ে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। যথাযথ প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ না হওয়ায় নিয়মানুযায়ী কোনো খাতেই অর্থ জমা হচ্ছে না।
এর আগে গত ২৪ মার্চ আজকের পত্রিকায় ‘বরাদ্দ পেয়ে পুরুষদের ভাড়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর কয়েক দিন বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া
হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কাজ হয়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০০৯ সালের প্রথম দিকে মার্কেটগুলো নির্মিত হয়। ইউনিয়ন পরিষদকে এগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রাপ্ত ভাড়ার ৫ শতাংশ ভূমি রাজস্ব খাতে, ১৫ শতাংশ মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণে ও ৮০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলে জমা হওয়ার কথা।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, মহিলা মার্কেট দুটি তাঁদের ব্যবস্থাপনায় ভাড়া দেওয়া ও অর্থ আদায় করা হবে
এমন তথ্য তাঁদের জানা ছিল না। এ ধরনের কোনো কাগজপত্রও তাঁদের পরিষদে সংরক্ষিত নেই। নারী উদ্যোক্তাদের মার্কেটগুলোতে নারীদেরই থাকা উচিত।
উত্তর চর আবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান জাফর উল্যাহ দুলাল হাওলাদার বলেন, সম্প্রতি বিষয়টি জানার পর তাঁরা এগুলোর ব্যবস্থাপনা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল ইকবাল বলেন, শুধু ভূমি অফিসে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে মার্কেটগুলো ভোগদখল করার কোনো সুযোগ
নেই। কেউ এমনটি করলে ঠিক
কাজ করেননি।
ইউএনও ও উপজেলা হাটবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অনজন দাশ বলেন, মহিলা মার্কেটগুলো বরাদ্দ নেওয়া ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করার সুযোগ নেই। বিষয়টি সম্পর্কে জেনে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ নারী উদ্যোক্তাদের ঘর জবরদখল করে রাখতে পারবেন না।