বান্দরবানের রুমায় রেমাক্রী-প্রাংসা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জিরা বমের বিরুদ্ধে দুস্থ মহিলাদের ভিজিডির ৩৩৪ বস্তা চাল কালো বাজারে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের নজরে আনেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে চাল ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে ওই চেয়ারম্যান। গত মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
জিরা বম রেমাক্রী-প্রাংসা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দুস্থ মহিলাদের ভিজিডি চাল বিতরণ করে জেলা মহিলা অধিদপ্তর। এই চাল সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগসাজশে জেলা সদরের অজ্ঞাত স্থানে রেখে দেন চেয়ারম্যান জিরা বম। বিষয়টি জানার পর ইউএনও চাল ফেরত দিতে বললে মঙ্গলবার রাতে বান্দরবান থেকে চাল ফেরত আনতে বাধ্য হন তিনি।
ইউএনও মো. মামুন শিবলী বলেন, ‘হতদরিদ্রদের ৩৩৪ বস্তা চাল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ না করে চেয়ারম্যান নিজের কাছে রেখে ছিলেন। খবর পেয়ে চালগুলো জব্দ করে গুদামে রেখে তালা মেরে রেখেছি।’
রেমাক্রী-প্রাংসা ইউপি সদস্য রমেশ ত্রিপুরা বলেছেন, ‘চেয়ারম্যান বলছেন আজ (মঙ্গলবার) রাতে চালের বস্তা আসবে, তা ঠিকমতো বুঝিয়ে দিতে। কাকে কী চাল বুঝিয়ে দিতে হবে তা বলেননি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান জিরা বম বলেন, ‘আমি বান্দরবান সদরে রেখে ছিলাম পরে বিতরণ করার জন্য।’ তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী পনলাল চক্রবর্তী তাঁর কাছ পাওনা টাকা না পেয়ে চক্রান্ত তাঁকে হইচইয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।
জানতে চাইলে রুমা বাজারের চাল ব্যবসায়ী পনলাল চক্রবর্তী বলেন, ‘চক্রান্তের কথা সত্য নয়। তবে চেয়ারম্যান জিরা বম চাল বিক্রির কথা বলে বিভিন্ন সময় নেওয়া প্রায় ৫ লাখ টাকা পাওনা আছে।’
এদিকে গত নয় মাস ধরে ইউপি চেয়ারম্যান জিরা বম মহিলা দুস্থদের ভিজিডি চাল বিতরণের মাস্টাররোল জমা দেয়নি।
তা ছাড়া ভিজিডি উপকারভোগীদের মাসিক সঞ্চয় মোট ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ টাকাও জমা দেননি। গত ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপজেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এ জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ জানিয়ে ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুপন চাকমা।