হোম > ছাপা সংস্করণ

অনুমোদনহীন ইটভাটা চলছেই

মাহিদুল ইসলাম, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নবায়ন না হলেও চলছে ইটভাটা। উপজেলার কয়েকটিতে ইট পোড়ানোর সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। একটি ভাটার ইট পোড়ানোর লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। তবু থেমে নেই ইট পোড়ানো।

এর মধ্যে মেসার্স মহসিন ব্রিকস, ইব্রাহিম ব্রিকস ও সাফারি ব্রিকস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এক শ মিটারের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। আর পলাশ ব্রিকস ও এমএমবি ব্রিকস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দুই শ মিটারের মধ্যে স্থাপন করে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না পরিবেশ অধিদপ্তরের বিধিবিধান। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলার সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় ইটভাটার মালিককে জরিমানা করেছি। আর কমলগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইটভাটাকে এ বছর পরিবেশগত নবায়ন ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। কেউ যদি পরিবেশ ছাড়পত্র না পেয়ে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করেন, তাহলে আমরা দ্রুতই ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পেয়ে কীভাবে বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটাগুলো কার্যক্রম চালাচ্ছে, এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর শুধু লোকদেখানো কাজ করে। নবায়ন ছাড়পত্র দেয়নি কাগজে-কলমে। ইটভাটাগুলো নিয়মিতই তো কার্যক্রম চালাচ্ছে। মাঝেমধ্যে জরিমানা করা হয়েছে ঠিকই তবে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার ইব্রাহিম ব্রিকস, সাফারি ব্রিকস, এমএমবি ব্রিকসকে পরিবেশগত নবায়ন ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি এবং মেসার্স মহসিন ব্রিকসের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এসব ইটভাটার ক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও থেমে নেই ইট পোড়ানো। ভাটার কালো ধোঁয়া ও ছাই পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ শিক্ষার্থীদের।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইন অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাহাড়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন ২০১৩ অনুযায়ী এমন স্পর্শকাতর জায়গায় ইটভাটা করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়ার সুযোগও নেই। উপজেলায় শুধু এই চারটি ব্রিকস নয়, কাটলতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কৃষিজমিতে পলাশ ব্রিকস নামে দুটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে।

ছাড়পত্র না পেয়ে কীভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন এ বিষয়ে ইব্রাহিম ব্রিকসের মালিক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে আইন মেনেই ভাটার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

সাফারি ব্রিকসের ব্যবস্থাপক রিংকু বাবু বলেন, ‘ছাড়পত্র নেই এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। ভাটার মালিক জানেন। তবে আমরা আইন মেনে ইটভাটা পরিচালনা করছি।’

এমএমবি ব্রিকসের পরিচালক নাহিদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছাড়পত্র দিয়েছে। আর ব্রিকস অন্যত্র সরিয়ে নিতে সময় বেঁধে দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আমরা অন্যত্র সরিয়ে নেব।’

ব্রিকস বাতিলের বিষয়ে মহসিন ব্রিকসের ব্যবস্থাপক মিন্টু দেব বলেন, ‘আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইটভাটা সরিয়ে নেওয়ার জন্য তিন বছর সময় নিয়েছি। এই সময়ের জন্য আমাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক সালেহ সোহেল বলেন, ‘পরিবেশ আইন অমান্য করে ইটভাটা স্থাপন করে পরিবেশ ও নতুন প্রজন্মকে কঠিন হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরও সচেতন হয়ে স্থায়ী সমাধানে কাজ করা উচিত।’

কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘জনবসতি কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা স্থাপনের ফলে অ্যালার্জি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ