হোম > ছাপা সংস্করণ

চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে ঝুঁকি

ডিমলা (নীলফামারী) সংবাদদাতা

নীলফামারীর ডিমলায় ভুল চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্রে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধের কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ। আরএমপি কোর্স করে স্থানীয় কিছু লোক নিজেদের ‘ডাক্তার’ পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এতে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আরএমপি কোর্স করেই পল্লিচিকিৎসকেরা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করছেন। এটি বন্ধ করা অথবা ব্যবস্থাপত্রে তাঁরা কী কী ওষুধ লিখতে পারবেন, এ ব্যাপারে যদি আইনগত কোনো নির্দেশনা থাকত, তবে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার বিধান থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে তা নেই।

জানা যায়, আরএমপি বা রুরাল মেডিকেল প্র্যাকটিশনার কোর্স করেই ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও চরাঞ্চলে কিছু লোক ‘ডাক্তার’ সেজে বসেছেন। স্থানীয় বাজারে চটকদার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেদার অপচিকিৎসা বাণিজ্য চালাচ্ছেন। এদের চিকিৎসায় রোগমুক্তি তো দূরের কথা, নানা জটিলতায় ভুগছেন হাজারো রোগী। তাঁদের ভুল চিকিৎসার কারণে রোগী মারা যাওয়া মতো ঘটনাও ঘটছে। আবার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের যাচ্ছেতাই ব্যবহারের কারণে সাধারণ রোগীকে আরও জটিলতর পর্যায়ে নিয়ে নিরাময় অসম্ভব করে ফেলছেন। নিজের বসার চেম্বার খোলার পাশাপাশি তাঁরা ওষুধও বিক্রি করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা সদর ও গ্রামগঞ্জে শত শত লাইসেন্সবিহীন নামধারী ‘ডাক্তার’ চেম্বার খুলে বসেছেন। চাপনীবাজারে হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার পাশাপাশি টিউমার অপারেশন করেন পল্লি চিকিৎসক মোকছেদুল ইসলাম। যার ব্যবস্থাপত্রে লেখা ডিএমএফ (ঢাকা) মেডিসিন, সার্জারি, মা ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞসহ নানা বিশেষণ। তাঁর চেম্বারে দেখা যায় একটি কক্ষে জরাজীর্ণ কিছু অপারেশনের সরঞ্জামসহ রক্ত পরীক্ষার স্যাম্পল পড়ে রয়েছে।

চর এলাকার দোহলপাড়া বাজারে দেখা যায়, লাজু ফার্মেসি। সেখানে রোগী দেখেন মোছা লাবনী আকতার ও মো. শরিফুল ইসলাম রিয়াদ। সাইনবোর্ডে লেখা মেডিসিন, অর্থোপেডিক, সার্জারি, নাক-কান-গলা, যৌন, শ্বাসকষ্ট, মা ও শিশু রোগে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এমবিবিএস ডিগ্রি না থাকলেও নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখেছেন।

তবে তিনি জানান, ডাক্তার লেখার নিয়ম নেই, অন্যদের দেখে তিনিও লিখেছেন।

উপজেলার রাপাহারা গ্রামের শ্যামলী আক্তার জানান, তার মেয়ে মনি আক্তারের (১৪) লেখাপড়ায় স্মরণশক্তি কম। প্রতিবেশীর পরামর্শে তিনি চাপানি বাজারের পল্লি চিকিৎসক মুলকুতের কাছে যান। এ সময় মেয়েকে ভালো করার জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়। কিন্তু ভালো হওয়ার বদলে দিন দিন মেয়ের হাত পা বাঁকা হয়ে হাঁটাচলা, কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসক বলেছেন ভুল চিকিৎসার কারণে তার মেয়ের এই অবস্থা হয়েছে। পরে তাকে পুরোপুরি সুস্থ করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি ওই পল্লি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ডিমলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েন।

এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ডাক্তার’ মুলকুত জানান, আমার জনপ্রিয়তা দেখে এক শ্রেণির লোক ষড়যন্ত্র করছে।

সদর ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজারের নিজের প্রতিষ্ঠান লাইফ কেয়ার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসেন পল্লি চিকিৎসক আলাকুল ইসলাম। দীর্ঘদিন তিনি নিজেকে ‘ডাক্তার’ পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাক্তার পরিচয় তুলে ধরার নিয়ম নেই। কিন্তু আমরা নিজেদের ডিমান্ড বাড়ানোর জন্য করে থাকি। শুধু আমি না অনেকেই এমন রয়েছেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ