হোম > ছাপা সংস্করণ

বিএনপির একাংশকে ভোটে আনার চেষ্টা

তানিম আহমেদ, ঢাকা

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারে থাকা অবস্থায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তাতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে এখনো অনড় বিএনপি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় তারা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ চায় বর্তমান সংবিধানের আওতায় বিগত দুইবারের মতো ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনে যেতে।

দেশের দুই বড় দলের কয়েকজন নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন না করার বিষয়ে বিএনপি অনড় থাকলে দলটির অন্তত একাংশকে যাতে নির্বাচনে আনা যায়, সে জন্য নেপথ্যে তৎপরতা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এই পথের উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যে বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের কিছু নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। নির্বাচন ও নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘নির্বাচনে আসা ছাড়া বিএনপির কোনো বিকল্প নেই। দলটির নেতাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত।’ বিএনপিকে অথবা ওই দলের একাংশকে নির্বাচনে আনতে কোনো উদ্যোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে অনেক কৌশল থাকে। বিএনপি ও তাদের মিত্ররা নিশ্চয় কোনো কৌশল নেবে।’ তিনি আওয়ামী লীগ, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

১৯৭৯, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসা বিএনপি ২০০৬ সালের অক্টোবর থেকে অর্থাৎ প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে। ২০০৮ সালে সেনা-সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ভোটে অংশ নিয়ে বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৩০টিতে জেতে। বিজয়ী আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাদ দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান পুনঃপ্রবর্তন করে। এরপর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বিএনপি বয়কট করে। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট মাত্র সাতটি আসন পায়। এরপর থেকেই বিএনপি আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে আর অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রধান দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এখন থেকে কাজ শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের কলেবর বাড়ানোর দিকটিও বিবেচনায় আছে। এ ক্ষেত্রে ১৪-দলীয় জোট ঠিক রেখে নির্বাচনী মহাজোট করা হতে পারে। বিএনপির সমমনা একাধিক দলকে মহাজোটে পেতে চায় আওয়ামী লীগ।

ওই নেতারা বলেছেন, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মাঠে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকলেও দলটির ভেতরে অনৈক্য এবং কয়েকটি ধারা ও উপধারার অস্তিত্ব স্পষ্ট। দলটির অপেক্ষাকৃত প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতাদের বিষয়ে লন্ডনপ্রবাসী তারেক রহমানের নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। আর ওই নেতারাও তারেক রহমানকে পছন্দ করছেন না। দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের মতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশি। এতে অভিজ্ঞ নেতাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ, বিরক্ত। এই নেতাদের অনেকেই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী।

বিএনপির এই অংশটিকে আগামী নির্বাচনে আনার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, এই ক্ষেত্রে বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতা এবং তাঁর এলাকার নেতৃস্থানীয় কর্মীদের নামে থাকা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হচ্ছে। এ ছাড়া নিজ নিজ এলাকায় নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সুযোগ নিশ্চিত করার কথাও আসছে। এসব আলোচনা এখনো প্রাথমিক স্তরে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছরের প্রথম দিকে আলোচনার পরবর্তী গতিপথ বোঝা যাবে।

বিএনপির নেতাদের ভাষ্য জানতে চাইলে দলের কয়েকজন নেতা বলেছেন, বিএনপি এখন হারানো অবস্থান ফিরে পেতে চায়। যেকোনো সময় নির্বাচনে জেতার মতো অবস্থায় থাকা দলটির সংসদে অবস্থান নামমাত্র। দলের নেতৃত্ব নিয়েও হতাশা রয়েছে। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে থাকলেও ‘স্থগিত সাজার নির্দেশাধীন থাকায়’ এবং শারীরিক অসুস্থতার জন্য দলকে সামনে থেকে মাঠে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে। তাঁর শিগগির দেশে ফেরার কোনো লক্ষণ নেই। এই পরিস্থিতিতে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হলে নির্বাচনে জোরদার অংশ নেওয়া ছাড়া দৃশ্যমান কোনো উপায় নেই দলের নেতা-কর্মীদের জন্য।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২০ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, দল কলহ-কোন্দলে ভরা, কেউ কাউকে মানে না। কারও প্রতি কারও কোনো আস্থা নেই। জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনেকে যোগ দিতে চায়।

অবশ্য এই বিষয়টিকে ‘সরকারের অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের (বিএনপি) মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার এটা একটা অপকৌশল।’ তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও এ ধরনের অপপ্রচার হয়েছে। এর কোনো মূল্য নেই।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ