যশোরের যশ খেজুরের রস। এই যশ যাঁদের হাত ধরে এসেছে, তাঁদেরই একজন দাউদ আলী মোড়ল। তাঁর জীবনের ৫০ বছরই কেটে গেছে রস সংগ্রহ করে। শীতকালে খেজুর আর গরমকালে তালগাছ কেটে যে আয় হয় তা দিয়েই সারা বছর সংসার চলে তাঁর। যিনি এখন দাউদ গাছি নামেই পরিচিত। এলাকায় খ্যাতি পেয়েছে তাঁর পাটালি ও গুড়।
৬৭ বছর বয়সী দাউদ আলী মোড়লের বাড়ি ঝিকরগাছার বল্লা গ্রামে। তাঁর খেজুরগাছ কাটার শুরুটা কিশোর বয়সে, বাবা এলাহি বক্স মোড়লের হাত ধরে। দাউদ আলীর বাবাও একজন গাছি ছিলেন। পৈতৃক সূত্রে কোনো জমি না থাকায় আয়ের জন্য পথ বেছে নেন গাছি পেশা। ফলে অন্যের গাছ বর্গা নিয়েই চলে রস সংগ্রহ আর পাঁচ সদস্যের সংসার।
দাউদ আলী জানান, ১৯৭১ সালে দাউদ আলী মোড়ল বলেন, ‘মাঝ কার্তিকের খেজুরগাছ তোলা (প্রস্তুত করা) শুরু করতে হয়। পরে সেই গাছে খিল বা নল দিতে হয়। এর পর রস সংগ্রহ শুরু করা হয়। ভারী শীতে দুপুরের পর থেকে গাছ কাটা শুরু করা যায়, কিন্তু শীত একটু কমে গেলে বিকেল বেলা থেকে গাছ কেটে এবং সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তা সংগ্রহ করতে হয়। ফাল্গুন মাসের শেষ দিন পর্যন্ত গাছ কাটা যায়।’
দাউদ আলী আরও বলেন, ‘গত ৫০ বছর ধরে শীতকালে খেজুরগাছ কেটে ৫ মাসের আয়ের টাকায় সারা বছর সংসার চালিয়ে আসছি। বয়স বেড়ে যাওয়ায় ছেলেরা আগের মতো বেশি গাছ বর্গা নিতে দেয় না। তবে খেজুরগাছ প্রস্তুত (তোলা) করি আগের মতো। এ বছর ৬০টি গাছ বর্গা নিয়েছি। খেজুরগাছ কাটার জন্য ইস্পাতের দুটি ধারালো দা, কঞ্চির তৈরি ঠুঙ্গা ও ভালো দড়ির তৈরি মজবুত দড়া আছে।’