পূর্ব সুন্দরবনকে ঘিরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এই এলাকার দারিদ্র্য দূর হবে।
মুন্সিগঞ্জ থেকে সুন্দরবনের দুটি পয়েন্টে ভ্রমণের সুযোগ পান পর্যটকেরা। পয়েন্ট দুটি হলো দোবেকি ও কলাগাছি। এই দুটি পয়েন্টে বানর, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি দেখতে পান পর্যটকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ‘সড়ক পথে সুন্দরবন-সাতক্ষীরার আকর্ষণ’-এই স্লোগানে সরকারিভাবে প্রচার চালানো হলেও সুন্দরবনে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা। জলযানে ওঠার জন্য নেই কোনো পন্টুন। নেই ভালোমানের হোটেল-মোটেল। তা ছাড়া রাস্তা ভাঙাচোরা। এসব কারণে ভ্রমণের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন পর্যটকেরা। তাই মুন্সিগঞ্জ এলাকায় সরকারিভাবে পর্যটনবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ করা দরকার। তাহলেই পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে।
কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখানে নৌকা বা অন্যান্য যানবাহনের যে সিন্ডিকেট আছে, তা সরকারি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আসা উচিত। তা ছাড়া জলযানগুলো আরও উন্নতমানের হওয়া উচিত। টুরিস্টরা যাতে ভালো নিরাপত্তা পায়, সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া এখানে আরও ভালো হোটেল-মোটেল আশা করি আমরা।’
মুন্সিগঞ্জ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ভবতোষ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘অঞ্চলটি খুবই দারিদ্র্যপীড়িত। এ অঞ্চলে সুযোগ ও সম্ভাবনার একটা বিষয় যদি চলে আসে, সেটা হলো সুন্দরবন। এ অঞ্চলের মানুষের দাবি, মুন্সিগঞ্জকে পর্যটনকেন্দ্র করা হোক। এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যাঁরা ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাও উপকৃত হবেন। লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তাই দাবি জানাচ্ছি, এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করা হোক।’
পশ্চিম সুন্দরবনের সহকারী বন সংরক্ষক আবু হাসান বলেন, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার সম্ভাব্যতা দেখতে ২০১৬ সালে মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ করেন তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুন্সিগঞ্জকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজার গিফারী।
সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, টুরিজমে যদি আমরা এগোতে পারি, তবে হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা উপার্জন করতে পারব। টুরিজমে দুটি প্রধান বিষয় থাকে। একটি হলো কমিউনিকেশন; অন্যটা সিকিউরিটি। এসব বিষয় নিশ্চিত হলে, সুন্দরবনে টুরিস্ট বাড়বে।’