ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রতনের সিদল শুঁটকির খ্যাতি ছড়িয়েছে সবখানে। উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের অরুয়াইল বাজারে ২০ বছর ধরে শুঁটকি বিক্রি করে ক্রেতাদের মন জয় করেছেন রতন দাস (৫০)।
দেশ স্বাধীনের পর প্রথমে তাঁর বাবা প্রাণবন্ধু এই রাজ সিদল শুঁটকি বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু ছেলে রতন দাসের হাত ধরেই এই রাজ সিদল শুঁটকির সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বাজারে আরও বহু সিদল শুঁটকির দোকান আছে। কিন্তু স্বাদে-মানে, গুণে পরম যত্নে বানানো রতনের রাজ সিদল ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে।
সরাইল ও নাসিরনগর উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল, চাতলপাড় ও চুন্টাসহ ওই দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন শুঁটকি নেওয়ার জন্য আসেন রতন দাসের দোকানে। অনেকে প্রবাসী প্রিয়জনদের কাছেও সিদল শুঁটকি পাঠান।
রতন দাস খুচরায় প্রতিদিন ১৫-২৫ হাজার টাকার সিদল শুঁটকি বিক্রি করতে পারেন। অথচ পাশের অন্য শুঁটকি বিক্রেতারা বিক্রি করে প্রতিদিন মাত্র ২-৩ হাজার টাকার।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশে বসবাসরত প্রবাসীদের কাছে রতনের রাজ সিদল পাঠান স্বজনেরা। প্রবাসীরাও রতনের রাজ সিদলের ভর্তা খেয়ে প্রশংসা করেন।
রতন দাস জানান, চট্টগ্রাম থেকে তাঁরা বাসপাতি নামে ভারতীয় শুকনো শুঁটকি সংগ্রহ করে প্রথমে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পুঁটি মাছের তেল মাখেন। পরে ওই তৈল মাখা শুঁটকিগুলো মটকার ভেতরে রাখেন। তারপর মুখ বন্ধ করে মটকাগুলো অন্ধকার রুমে ছয় মাসের জন্য রেখে দেন। ছয় মাস পর সিদল বিক্রির উপযোগী হয়।
কথা হয় শুঁটকি কিনতে আসা অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহাজ উদ্দিনের সঙ্গে। ২০ বছর ধরে রতনের কাছ থেকে শুঁটকি কেনেন। তিনি বলেন, এই শুঁটকির ঘ্রাণ এবং স্বাদ অন্য কোনো দোকানের শুঁটকিতে নেই। বিদেশে থাকা ছেলের কাছেও রতন দাসের সিদল শুঁটকি পাঠানো হয়।
বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব বলেন, রতনের শুঁটকির অনেক নাম-ডাক । দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ শুঁটকি কিনতে আসেন। শুঁটকির যে স্বাদ, তা অন্য কারো শুঁটকিতে পাওয়া যায় না। মানও খুব ভালো।