কোরআন-হাদিসে দান-সদকার অসংখ্য ফজিলতের কথা বিবৃত হয়েছে। এক হাদিসে মহানবী (সা.) দানের অসামান্য দুটি ফজিলতের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (তিরমিজি)
জাগতিক জীবনের অন্য সব বিষয়ের মতো মানুষের পাপ-পুণ্যেরও বিশেষ প্রভাব থাকে। উপর্যুক্ত হাদিসে সদকার দুটি প্রভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক. জীবনে চলার পথে মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়; এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য, আল্লাহর দয়া ও সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা একটি ফলপ্রসূ আমল। সদকা করলে আল্লাহর সে রাগ দূর হয়ে যায়। দুই. সদকার বরকতে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন, কিংবা তাকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন।
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু যর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ (অর্থাৎ, সদকা করলে আল্লাহর কাছে কী প্রতিদান পাওয়া যাবে?) জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমদ)
অনেক হাদিসবিশারদ এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়াতেও সম্পদ বহু গুণ বাড়িয়ে দেবেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়ে বহু গুণ বেশি। বাস্তবেও এটি পরিলক্ষিত হয় যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে আল্লাহর পথে তাঁর বান্দাদের যত বেশি দান করা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি তার সম্পদ বেড়ে যায়।
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক