দুপুরের সূর্য তখন পশ্চিম দিকে হেলতে শুরু করেছে। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর বুকে বইছে মৃদু হিমেল হাওয়া। নদীটির তীরে সীতাঘাট মন্দিরসংলগ্ন এলাকায় বইঠা হাতে দেখা মিলল ষাটোর্ধ্ব এক নারীর। যাত্রীর অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। তিন বছর ধরে কর্ণফুলীর এ ঘাটে যাত্রী পারাপার করেন তিনি।
নৌকা চালিয়ে জীবনসংগ্রামে এগিয়ে চলা এ নারীর নাম সাফিয়া খাতুন। শিলছড়ি সীতাঘাট এলাকার বাসিন্দা তিনি। আগে এ কাজ করতেন তাঁর স্বামী আবুল কাশেম। তিন বছর আগে কাশেমের মৃত্যুর পর নৌকার সঙ্গে সংসারের হালও ধরতে হয় সাফিয়ার।
তবে সাফিয়ার সংসারে অভাব যেন নিত্যসঙ্গী। তিনি জানালেন, চার মেয়ে এবং এক ছেলে তাঁর। তাঁদের মধ্যে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে আলাদা থাকেন। এক মেয়েকে নিয়ে আছেন সাফিয়া।
অনেকটা আক্ষেপের সুরেই সাফিয়া বললেন, ‘এই বুড়া বয়সেও সংসারের বোঝা বয়ে যাচ্ছি। অসুস্থ শরীর নিয়ে আর পারছি না এই বোঝা টানতে।’
গতকাল সোমবার কর্ণফুলীর তীরে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও কোনো যাত্রী পাননি সাফিয়া। আলাপের একপর্যায়ে তিনিই জানালেন এর কারণ। বলেন, ‘শুধু সীতাঘাটে মা সীতামন্দিরে ধর্মীয় উৎসবের সময় যাত্রী পারাপার বেশি হয়। তখন গড়ে ৩০০-৫০০ টাকা আয় হয়। উৎসব না থাকলে দিনে ১০০-২০০ টাকা নিয়েই খুশি থাকতে হয়। কোনো দিন আবার এক টাকাও ইনকাম হয় না।’
সাফিয়াকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে ৫ নম্বর ওয়াগ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সরোয়ার।