ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অনেক কৃষক এবার আমনের কাঙ্ক্ষিত ফলন ঘরে তুলতে পারেননি। তাই লোকসান পুষিয়ে নিতে বোরো ধান চাষের জন্য আগেভাগে বীজতলা তৈরি করছেন। ভালো ফলনের প্রত্যাশা নিয়ে বোরো চাষের জন্য খেত তৈরিরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকেরা।
ফুলবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বীজ তলার অবস্থা ভালো হলেও ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা। ঠান্ডার কারণে অনেক খেত সাদা ও লালচে রঙের হয়ে যাচ্ছে। কিছু খেতে মড়ক দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫০৬ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বীজতলা তৈরি করা হয়েছে ৫৮৫ হেক্টর জমিতে। উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় উবশী-২৮,২৯, ৫৮, ব্রি ধান-৮১,৮৬, ৮৮,৯২, ১০০ সহ বিভিন্ন প্রজাতির ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন চাষিরা।
উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক দুলাল মিয়া জানান, আমনের আবাদ ভালো হওয়ায় ভালো ফলনের আশা করেছিলেন। তবে জাওয়াদের সময় প্রচুর বৃষ্টিতে ৫০ শতক জমির ধান পানিতে ডুবে যায়। ফলে ফলন বিপর্যয় ঘটে। এখন বোরোর চাষাবাদ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।
নওদাবস গ্ৰামের কৃষক সাইফুল হক বলেন, ‘আমার নিজের জমি নেই। বর্গা নিয়েছি। বীজতলা তৈরি করেছি। আশা করছি কয়েক সপ্তাহ পরে রোপণ শুরু করতে পারব।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম জানান, ঠান্ডাজনিত কারণে যাতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য বীজতলার চারদিকে আইল বেঁধে সন্ধ্যায় পানি দিয়ে সকালে ছেড়ে দেওয়া ও সন্ধ্যার পর পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ১৬ লিটারের ড্রামে প্রতি ১০ গ্ৰাম হাদাক অথবা থিমিটের সঙ্গে ৫০ গ্ৰাম ইউরিয়া, ৫০ গ্ৰাম সালফার, ৩০ গ্ৰাম পটাশ, ৩০ গ্ৰাম ট্রিপল সুপার ফসফেট মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর পর বীজ তলায় স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘বীজতলায় সুষম মাত্রায় জৈব-অজৈব সার প্রয়োগ এবং পোকামাকড় দমনসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি কৃষকদের।’