সিলেট অঞ্চলের ঐতিহ্য চোঙা পিঠা। আর তাইতো শীত এলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কদর বেড়ে যায় এ পিঠার। ঢালু বাঁশের লম্বা সরু চোঙায় দুধ, চিনি, নারিকেল, চালের গুঁড়া দিয়ে নাড়ার আগুনে তা সেদ্ধ করা হয়। এটি দেখতে লম্বাটে সাদা রঙের। চোঙার ভেতরে তৈরি বলে এর নাম চোঙা পিঠা।
প্রতি শীতে এ জনপ্রিয় পিঠার আয়োজন করা হয় উপজেলার গ্রামগুলোতে। বাজারগুলোতে চলছে চোঙা বিক্রির ধুম। শীতের আমেজ বাড়িয়ে দিতে অনেকে আবার রাতের আঁধারে চোঙা পুড়িয়ে তৈরি করেন এ পিঠা। অনেকে আয়োজন করেন পিঠা উৎসবের। অতিথিদেরও আমন্ত্রণ করা হয় পিঠা উৎসবে।
শহীদনগর বাজারে চোঙা বিক্রির সময় কথা হয় জামাল মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতি বছর তিনি চোঙা বিক্রি করেন। প্রতিটির দাম রাখা হয় পাঁচ টাকা করে। তবে কোনো ক্রেতা একসঙ্গে বেশি নিলে দাম কম রাখেন।
জামাল মিয়া বলেন, বাঁশমহাল থেকে ঢালু বাঁশ বাড়িতে এনে পিঠার জন্য পিঠা কাটি। এক সময় চোঙার বেশ চাহিদা ছিল কিন্তু এখন অনেকটা কমে গেছে।
চোঙা কিনতে আসা আরিফ আহমেদ বলেন, প্রতি বছর পরিবার ও আত্মীয়দের নিয়ে চোঙা পিঠার আয়োজন করি। এ বছর ৪০টি চোঙা কিনেছি। মাছ ও মাংসের সঙ্গে এই পিঠা খেতে বেশ সুস্বাদু। তবে এ পিঠা তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম হয়। শীতের রাতে গরম বাঁশের ভেতর থেকে পিঠা বের করে খাওয়ার অনুভূতি অন্য রকম।
উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকার আব্দুল মতিন বলেন, আমন ফসল ঘরে তুলে মাঠ থেকে শুকনো খড় জমা করে পৌষের শীতে চোঙা পিঠার আয়োজন করা হয়। চোঙা পোড়ানোর আনন্দটা এখন আর আগের মতো নেই। এখনো আমার বাড়িতে প্রতি বছর একবার চোঙা পিঠা পোড়ানো হয়।