মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সীমান্ত, সেখানকার পরিস্থিতি ঘোলাটে। মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর যে লড়াই হচ্ছে, তাতে দুই দেশের জন্যই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে যাঁরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন, তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়তো সহজ হবে। তবে তাঁরা যাতে বাংলাদেশের ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যেতে না পারেন, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
রাখাইনে গোলাগুলির মুখে ভয় পেয়ে রোহিঙ্গারা আবার বাংলাদেশে আসতে শুরু করলে মুশকিল। অবশ্য এখানে পরিস্থিতি বোঝার আছে। এর আগে ২০১৭ সালসহ বিভিন্ন সময় তাদের (রোহিঙ্গা) ওপর আক্রমণ হয়েছে রাখাইন থেকে তাড়ানোর জন্য। এবার কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে না। কাজেই কেউ চলে এলে খাবারদাবার দিয়ে বুঝিয়ে রাখাইনের ভেতরেই তাদের নিজ নিজ গ্রামের আশপাশে আশ্রয় নিতে ফেরত পাঠানো যেতে পারে।
লক্ষণীয় হলো, মিয়ানমারের সঙ্গে ভারত, থাইল্যান্ড, চীনসহ প্রায় সব সীমান্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধ করছে। অন্য দেশগুলো নিজ নিজ সীমান্তে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে, তা দেখা যেতে পারে। প্রয়োজনে যৌথভাবে করা যায় কি না, তার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। আর রাখাইনে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করা যায় কি না, তা দেখতে চীনকে বলা যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবিকে ধৈর্য ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি আছে, তা বিবেচনায় রেখেই হয়তো তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এমন ভাবমূর্তি রাখাইনের মতো সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে রাখা কঠিন।
পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের শক্ত অবস্থানে রাখতে হবে।
লেখক: চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত