গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদী। উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়ন অংশের ধামলই গ্রাম থেকে নদীর তীরের মাটি কেটে রাস্তা ভরাটের কাজ করছে মেসার্স ডি এ এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এভাবে ভরাট করায় রাস্তা ভেঙে নদীতেই বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কাওরাইদ-হয়দেবপুর সীমান্ত বাজার রাস্তার উন্নয়নকাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
কার্যাদেশ পেয়েও দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রেখেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডি এ এন্টারপ্রাইজ। হঠাৎ গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে নদীর তীর থেকে মাটি কেটে রাস্তার পাড় ভরাট করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি ভেকু একেবারে খিরু নদীর নিচে নেমে নদীর পাড় কেটে সেই মাটি দিয়ে রাস্তার পাড় ভরাটের কাজ করছে। এতে ভরাটকৃত জায়গার পাশে অনেক গভীর গর্তে পরিণত হচ্ছে। ফলে যেকোনো সময় রাস্তা ভেঙে আবার নদীতে বিলীনের ঝুঁকি রয়েছে।
ধামলই গ্রামের কৃষক মো. হোসেন বলেন, এভাবে নদীর তীরের মাটি কেটে সড়কের পাড় ভরাট করলে বর্ষাকালে বৃষ্টির সময় সড়ক ভেঙে নদীর মধ্যে বিলীন হবে। তিনি বাইরে থেকে মাটি এনে রাস্তা ভরাটের দাবি জানান।
বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী বলেন, নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে রাস্তা মেরামতের কোনো সুযোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ কাজ।
ডি এ এন্টারপ্রাইজের সাইট কর্মকর্তা ফাহাদ বলেন, তিনি ঠিকাদারের পক্ষে মাটি কাটার কাজ করাচ্ছেন। আশপাশে কোথাও মাটি না পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের পরামর্শে নদীর তীর থেকে মাটি কেটে পাড় ভরাট হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী অফিস তাঁদের এভাবে মাটি কাটতে বলেছে। এ জন্য নদী থেকে মাটি কাটা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ডি এ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুকিব আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী এ জেড এম রফিকুল আহসান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাটি কিনে ভরাট করার শর্তে কাজ বুঝে নেয়। নদীর মাটি কেটে রাস্তার পাড় ভরাটের কোনো ধরনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জ্বল কুমার হালদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, নদীর পাড় কেটে মাটি দিয়ে রাস্তার পাশে ভরাটের কোনো সুযোগ নেই। সরেজমিন গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।