বরিশালের হিজলা উপজেলায় রাতের আঁধারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ মাহমুদ দিপু সিকদারের বিরুদ্ধে। এ সময় আরও এক শিক্ষক আহত হন। গত মঙ্গলবার রাতে কাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঢুকে এ হামলা চালান দিপু সিকদার। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সম্ভাব্য সভাপতির পদ নিয়ে বিরোধের জেরে এ হামলা হয় বলে জানা গেছে।
হামলার শিকার প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখার শিক্ষক রিপন দাস বাদী হয়ে বুধবার আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ মাহমুদ সিকদারসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে হিজলা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রমতে, হামলাকারী দিপু সিকদারের বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিপু সিকদার ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদপ্রত্যাশী। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথবিরোধী গ্রুপের শীর্ষ নেতা। অন্যদিকে পংকজ দেবনাথের পক্ষের সভাপতি প্রার্থী বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সভাপতি অশোক কুমার চ্যাটার্জি। সোমবার ওই প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধির ভোট হয়।
প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন জানান, নবম শ্রেণির নিবন্ধন শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো এবং শূন্য শিক্ষক পদের তালিকা এনটিআরসিতে পাঠানোর শেষদিন বৃহস্পতিবার। এ জন্য তিনি কলেজ শাখার শিক্ষক রিপন দাস ও কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষক মো. মাইনউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার রাতে কলেজে কাজ করছিলেন। রাত ৯টার দিকে দিপু সিকদারের নেতৃত্বে ৮-১০ জন লাইব্রেরিতে ঢুকে তাঁকে ও অপর শিক্ষক রিপন দাসকে গালিগালাজ ও মারধর করেন।
দিপু সিকদার বলেন, স্থানীয় কিছু লোক তাকে এসে জানান যে, প্রধান শিক্ষক ও তাঁর কয়েকজন সহযোগী রাতে কমিটি প্রস্তুত করে বোর্ডে পাঠানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এ খবর পেয়ে তিনি সেখানে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলেন এবং সবার সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন। প্রতিপক্ষ গ্রুপ এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে শিক্ষকদের মারধরের গুজব ছড়াচ্ছে।
কাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি অশোক কুমার চ্যাটার্জি বলেন, শিক্ষকেরা রাতে কলেজে শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের কাজ করছিলেন। সেখানে ঢুকে দিপু সিকদারের নেতৃত্বে শিক্ষকদের মারধর করা হয়।
হিজলা থানার ওসি ইউনুস আলী মৃধা বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হবে।