শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবিতে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সালমা বেগম (৪০) ও তাঁর মেয়ে ফাতিমা আক্তার (৭) মারা গেছেন। গতকাল সোমবার সকালে তাঁদের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সালমা বেগম ও ফাতিমা আক্তারের বাড়ি উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ভাজনা কদমতলা গ্রামে। লঞ্চডুবিতে দুজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ থেকে বরিশালে বড় মেয়ের বাসায় বেড়াতে আসার জন্য সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হন সালমা বেগম। সঙ্গে ছিল সাত বছরের মেয়ে ফাতিমা আক্তার। মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে সদরঘাটের লঞ্চে না ওঠে ভুলে ওঠে পড়েন নারায়ণগঞ্জের একটি লঞ্চে।
নারায়ণগঞ্জ নৌ টার্মিনালে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর এমএল আফসার নামে একটি লঞ্চে ওঠেন তাঁরা। এ সময় একমাত্র নাতি আহাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাও বলেন সালমা। তিনি এ সময় নাতিকে বলেন, ‘নানা মোরা হারাইয়া গেছি। সদরঘাট আইতে দেরি হবে।’ মা ও মেয়ে সেই যে হারিয়ে গেলেন, দুজনেই ফিরলেন লাশ হয়ে।
নিহত সালমা বেগম ও তাঁর স্বামী ইউনুছ খলিফার চার মেয়ে ও এক ছেলে। তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তাঁরা মুন্সিগঞ্জে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ইউনুছ খলিফা পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তিনি স্বামীর সঙ্গে বরিশালে থাকেন।
সালমার স্বামী ইউনুছ বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশ থেকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় আমার স্ত্রী ও মেয়ে লঞ্চডুবিতে মারা গেছেন। স্ত্রী-মেয়ে আমাকে ফালাইয়া চইলা গেল। আমার সব শেষ হয়ে গেল। কত কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের হাফেজি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করাই। আল্লাহ তুমি এ কি করলা!’
মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাশার নাসির বলেন, ‘লঞ্চডুবিতে মা-মেয়ের মৃত্যুর ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। দুজনের অকালমৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভাজনা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে মা-মেয়ের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।’