১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর দুপুরে পাকিস্তানি সেনারা গানবোট, লঞ্চ ও স্টিমারে চেপে বরিশাল থেকে গোপনে পালিয়ে যায়। পালানোর খবরটি জানাজানি হয় পরে। ভারতীয় বিমানবাহিনী দুপুর ২টায় বরিশালে হামলা চালায়। দখলদারদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে বেলা ৩টায় বরিশালের অদূরে অবস্থান করা সুলতান মাস্টার ও আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল প্রবেশ করে শহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
প্রায় সাড়ে ৭ মাস অবরুদ্ধ থাকার পর ১৯৭১ সালের এদিনে এভাবে পাক হানাদারদের কবল থেকে বরিশাল পুরোপুরি মুক্ত হয়েছিল।
মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মানিক বীর প্রতীক বলেন, ‘৭১ এর ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল ছিল শত্রুমুক্ত। ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী আকাশপথে বরিশাল ও পটুয়াখালীতে হামলা চালায়। দ্বিতীয় দফা হামলা চালায় ২৬ এপ্রিল জল, স্থল ও আকাশপথে। বরিশাল শত্রুকবলিত হওয়ার আগেই সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা সরকারের অস্থায়ী সচিবালয়। এ ঘাঁটি থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করা হতো। মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানোর কাজও হতো এখান থেকে। পাকিস্তানি হানাদাররা বরিশাল শহর দখল করে নেওয়ার পর বরিশালের মুক্তিযোদ্ধারা পার্শ্ববর্তী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে অবস্থান নেন। শহরের চারপাশ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদাররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
বরিশাল মুক্ত দিবস উপলক্ষে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আজ বুধবার সকাল ১০টায় ওয়াপদা কলোনি বধ্যভূমির শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে। বিকেলে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে সিটি করপোরেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে ‘সম্প্রীতির আলোয় আলোকিত কনসার্ট’।