মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে তুফান-২ নামের ৮৮ হাত বাইচের নৌকা নির্মাণ হচ্ছে। এতে ব্যয় করা হচ্ছে আট লাখ টাকা। বিশাল নৌকাটি একপলক দেখতে এরই মধ্যে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসতে শুরু করেছেন।
উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণ হচ্ছে বিশাল আকৃতির এই নৌকা। কারিগরেরা তাঁদের নিপুণ ছোঁয়ায় বাইচের নৌকা তৈরি করছেন। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটছেন, কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক লাগাতে ব্যস্ত। নৌকা তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে লোহা, শাল, গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ।
নৌকাটির মূল কারিগর নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাঙ্গা পিঠা এলাকার সুনীলের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ছয়জন কারিগর মিলে দুই মাস ধরে নৌকাটি তৈরিতে কাজ করছেন। নৌকাটির সব রকমের কাজ শেষ পর্যায়ে। শেষ সময়ে ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। এরপর রং করতে আলকাতরা ও গাবের রস ব্যবহার করা হবে।
তেঘরিয়া গ্রামের নৌকাবাইচের মাল্লা জসিম ব্যাপারী বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর ধরে নৌকা বাইচে অংশগ্রহণ করি। আমার দেখা এটাই সবচেয়ে বড় নৌকা।’
তেগুরিয়া যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম আসাদ বলেন, ‘আমাদের এলাকার নৌকার মাঝিমাল্লারা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই নৌকা তৈরি করা হচ্ছে।’
তেঘরিয়া যুব সংঘের সভাপতি শেখ শহীদুল্লাহ সোহেল বলেন, ‘আমাদের এলাকার প্রবীণেরা নৌকাবাইচের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসছেন আদিকাল থেকে। আমাদের আগের একটি তুফান নামের ৬০ হাত বাইচের নৌকা রয়েছে। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য এবং পূর্বসূরিদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বিশাল আকারের এ নৌকাটি আট লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এই নতুন নৌকাটির নামকরণ হয়েছে তুফান-২। আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নৌকাবাইচে অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার এনেছি। বড় নৌকা দিয়ে আরও বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারব—ইনশা আল্লাহ।’