জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উপকূলের জেলেরা। বেশি দরে তেল কিনে নদ-নদীতে গিয়ে পর্যাপ্ত মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন তাঁরা। এ কারণে অনেকে মাছ শিকারে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন। ঘাটে সারি সারি ট্রলার বেঁধে রেখেছেন জেলেরা।
দৌলতখান উপজেলার পাতারখাল এলাকার জেলে খালেক মাঝি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আগে তেলের দাম ৬৫ টাকা ছিল। এখন তেলের দাম ৯০ টাকা। ৮ লিটার তেল কিনে ৫ জন জেলেকে নিয়ে সারা দিন নদীতে জাল পেতে এক হাজার টাকার মাছ পেয়েছি। দোকানে চায়ের খরচ হয়েছে ২০০ টাকা কিন্তু ৮ লিটার তেল কিনেছি ৬০০ টাকা দিয়ে। সব খরচ দিয়ে ৫ জন জেলে ২০০ টাকা ভাগ করে নিয়েছি। আমরা কি না খেয়ে মরব? গত নিষেধাজ্ঞার সময়ের ধার-দেনা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে চলেছি। এখনো নদীতে তেমন মাছ নেই। যা পাই তেলের খরচও ওঠে না। এমন অবস্থায় পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আল্লাহর দিকে তাকানো ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘একে তো নদীতে তেমন মাছ নেই। তার ওপর তেলের দাম দিনদিন এভাবে বাড়লে আমরা কীভাবে নদীতে যাব? লোকসান গুনতে গুনতে কিছুদিন পর আমাদের ট্রলার বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’ এমন অবস্থা দৌলতখানের জেলে মামুন, সিরাজ, রুহুল আমিনসহ হাজার হাজার জেলেদের।
দৌলতখানের মৎস্য ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন আলী বলেন, ‘এবার মৌসুমের শুরু থেকেই দৌলতখানের মেঘনা নদীতে তেমন মাছ নেই। এতে জেলেরা অনেকটা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এখন নতুন করে তেলের দাম বাড়ানোয় তাঁরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। দিন দিন জেলেদের ওপর ঋণের বোঝা ভারী হওয়ায় অনেক জেলে মাছ শিকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।’
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হাছনাইন বলেন, ‘দৌলতখানে উপজেলায় ২১ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এ ছাড়া অনিবন্ধিত কয়েক হাজার জেলে রয়েছে। নদীতে মাছ শিকার করে তাঁদের সংসার চলে। বর্তমানে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা ক্ষতির মুখে পড়েছে।’