কাউনিয়ার ধুমনদীর ওপর স্থানীয় লোকজনের নির্মাণ করা বাঁশের সাঁকোটি সংস্কারের অভাবে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। প্রায় ৬০০ ফুট লম্বা এই সাঁকো দিয়ে আট গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
সারাই ইউনিয়নের ধূমেরকুঠি ভিতরকুটি গ্রামে সাঁকোটি অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাঁকোটির উত্তরে প্রান্তে রয়েছে হারাগাছ পৌরসভার উত্তর ধুমেরপাড়, মেনাজবাজার, ঠাকুরদাশ, মাছুয়াটারী ও বাংলাবাজার। আর দক্ষিণ পাড়ে আছে সারাই ইউনিয়নের ভিতরকুটি ধুমেরকুটি, বালাপাড়া ও মাছহাড়ী গ্রাম।
এসব গ্রামের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার হন। এখানে নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণর দাবি প্রায় তিন যুগের। কিন্তু পাকা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে না।
গ্রামের মানুষের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের আগে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আর কেউ কথা রাখেন না। এমন অবস্থায় নদী পারাপারের জন্য নড়বড়ে সাঁকোই ভরসা। তবে এটি নিয়মিত সংস্কার না হওয়ায় বর্তমান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সারাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য নুর মোহাম্মদ বলেন, দুইপাড়ের লোকজন প্রথমে ১৯৮৯ সাল চাঁদা উঠিয়ে বাঁশ কিনে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সাঁকো তৈরি করেন।
গ্রামবাসী জানান, সাঁকোটির উত্তরে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোটি পার হয়। বর্ষার সময় নদীতে পানি বেশি হলে এটি দুলতে থাকে। আর এর ওপর দিয়ে অনেক অভিভাবক তাঁদের ছোট ছেলেমেয়েকে স্কুল পাঠাতে ভয় পান।
ভিতরকুঠি গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, সাঁকো থেকে নদীর গভীরতা অনেক। সাঁকোটি আনুমানিক ৬০০ ফুট দীর্ঘ এবং চার ফুট প্রস্থ। এর পাটাতন নড়বড়ে। এটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর দুই পাড়ের অনেক মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য ঘাড়ে করে হাটে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রহমত আলী বলেন, সাঁকোর ওপর দিয়ে মানুষ হেঁটে পার হতে পারলেও কোনো প্রকার যানবাহন চলে না। সাঁকোর বদলে একটি পাকা সেতু হলে এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
এ বিষয়ে সারাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, ধুমনদীর ওপর একটি পাকা সেতু এবং পাকা সড়ক নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। খুব শিগগিরই সেতুটি নির্মাণ করা হবে। সেতুটি হলে নদীর দুই পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।
সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি বলেন, পাকা সেতু ও সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে টেন্ডারের মাধ্যমে নির্মাণকাজ করা হবে।