দিনের নির্ধারিত ওভারের খেলা তখন শেষ। আম্পায়ার নিতিন মেনন প্রথমে কথা বলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্র ও আজাজ প্যাটেলের সঙ্গে। এরপর কথা বলেন ভারতীয় অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে।
বোঝাই যাচ্ছিল, রাহানেদের ইচ্ছে ছিল আরও কয়েক ওভার খেলে ম্যাচটা নিজেদের করে নেওয়ার। তবে আলোক-স্বল্পতায় শেষ পর্যন্ত আর খেলা চালিয়ে নিতে রাজি হননি আম্পায়াররা। হারের মুখ থেকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ম্যাচ বাঁচানোর আনন্দ তখন কিউই শিবিরে।
গতকাল কানপুরে শেষ দিনের লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের হারটা একটা পর্যায়ে সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। নিউজিল্যান্ড যখন নবম উইকেট হারায়, তখন বাকি ৮ ওভারের বেশি। জিততে ভারতের প্রয়োজন আর ১টি উইকেট। পরীক্ষিত ব্যাটাররা যখন ব্যর্থ আজাজকে নিয়ে রাচিন কতক্ষণই-বা আর লড়াই করতে পারবেন! কিন্তু অবিশ্বাস্য লড়াইয়ে প্রায় অসম্ভব কাজটিই শেষ করে মাঠ ছাড়েন এই দুজন। ফিরিয়ে আনলেন হারাতে বসা টেস্টের চিরন্তন সৌন্দর্যও। ৯১ বল খেলে ১৮ রান করে এই ড্রয়ের অন্যতম নায়ক রাচিন। তবে সমান কৃতিত্ব দিতে হবে আজাজকেও। জাদেজা-অশ্বিনদের স্পিন বিষ সামলে তিনি খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ২৩ বল।
দিনের শুরুটা অবশ্য আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই করেছিল নিউজিল্যান্ড। ‘নাইট ওয়াচম্যান’ উইলিয়াম সামারভিলেকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন টম ল্যাথাম। ১১০ বল খেলে ৩৬ রান করে আউট হন সামারভিলে। ফিফটি পূরণ করে ফেরেন ল্যাথামও। এরপর দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ৭০তম ওভারে অধিনায়ক উইলিয়ামসন যখন আউট হন তখনো লম্বা পথ পাড়ি দেওয়া বাকি কিউইদের। তবে দারুণভাবে ভারতের ঘূর্ণি বিষ সামলে সেই পথ পাড়ি দেয় নিউজিল্যান্ড।
দারুণভাবে লড়াই করে ম্যাচ বাঁচাতে পেরে উচ্ছ্বসিত কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘ভারত খুবই শক্তিশালী দল। বেশির ভাগ সময় তারা এগিয়ে ছিল, তবে আমরাও হাল ছাড়িনি। তিনটি ফলই সম্ভব ছিল। শেষ দিন আমরা দারুণভাবে লড়াই করেছি। রাচিন টপঅর্ডার ব্যাটার, তবে এ ধরনের পরিবেশে সে অভ্যস্ত নয়। আমাদের প্রথম দুই ব্যাটারও দারুণ ব্যাটিং করেছে।’
অন্যদিকে কাছাকাছি গিয়েও জিততে না পারায় হতাশ ভারতীয় অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তারা খুব ভালো খেলেছে। দ্বিতীয় সেশনে বেশ ভালোভাবেই ফিরে আসতে পেরেছিলাম। পেসাররাও ভালো বোলিং করেছে।’