মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কৃষিকাজে বাড়ছে নারীর চাহিদা। জমি প্রস্তুত করা, আলু রোপণ, জমি থেকে শাকসবজি সংগ্রহসহ বিভিন্ন কাজ করেন নারীরা। একই কাজ পুরুষ শ্রমিক দিয়ে করাতে মজুরি দিতে হয় বেশি। তাই খরচ কমাতে নারী শ্রমিকদের দিকেই আগ্রহ বেশি চাষিদের। তবে একই কাজ করেও পুরুষদের তুলনায় মজুরি কম পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে নারী শ্রমিকদের মধ্যে।
উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে গতকাল দেখা যায়, পুরুষ শ্রমিকের জমিতে আলুবীজ রোপণের জন্য লাঙল দিয়ে ফালি করে দিচ্ছেন, সেসব ফালিতে আলুবীজ রোপণ করছেন একদল নারী শ্রমিক। সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আলু রোপণের আদর্শ সময় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পরবর্তী ২৫ দিন। গত বছর ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এ বছর ৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা দিন কাজ করে একজন নারী শ্রমিক মজুরি পান ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। আর পুরুষ শ্রমিকেরা পাচ্ছেন ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
লালমনিরহাটের বাসিন্দা নারী শ্রমিক লতা রানী দাস জানান, ১১ বছর আগে স্বামী মারা গেছেন তাঁর। দীর্ঘদিন ধরেই কৃষিকাজ করে সংসার সামলাচ্ছেন। কিন্তু পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় নারীদের মজুরি কম হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আম্বিয়া বেগম নামের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৪০০ টাকা মজুরিতে কৃষিজমিতে কাজ করছি। আলু বোনা থেকে শুরু করে ওঠানো পর্যন্ত কাজ করি। কৃষিশ্রমিকের কাজ করেই সংসার চালাই।’
কথা হলে আরও কয়েকজন নারী শ্রমিক জানান, আগে নারীদের কাজে নিতেন না কৃষকেরা। এখন দিন দিন নারী শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুরুষের তুলনায় নারীদের মজুরি কম হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, সারা বছর উপজেলায় কৃষিকাজে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। পুরুষ শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় নারী শ্রমিকদের প্রতি চাষিদের আগ্রহ বেশি থাকে। তুলনামূলক কম মজুরিতে পাওয়া যায় বলে কৃষকদের কাছে নারী শ্রমিকদের কদর বাড়ছে।