পড়াশোনার পাশাপাশি সবজি চাষ করে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা এনেছেন নরসিংদীর বেলাবর স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আরমান। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে করোনাকালে বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ শুরু করেন তিনি। সবজি বিক্রি করে চলতি মৌসুমে তাঁর আয় হয়েছে লাখ টাকার বেশি।
মুহাম্মদ আরমান উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের চর কাশিমনগর গ্রামের মো. মোতাহার হোসেন (মুক্তার) মিয়ার
ছেলে। সাত ভাই-বোন নিয়ে তাঁর বাবা মো. মোতাহার হোসেনের অভাব লেগেই থাকত। বড় ভাই মালয়েশিয়াপ্রবাসী আর বাকি পাঁচ ভাই-বোন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন। করোনার কারণে বড় ভাই বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে পারেন না। সে সময়ে বাবার সঙ্গে পরিবারের হাল ধরেন মুহাম্মদ আরমান। অন্যের জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন বিভিন্ন রকমের সবজির চাষ।
চলতি বছর ৮০ শতাংশ জমিতে ফুলকপি, ৫০ শতাংশে লাউ, ৪০ শতাংশে মিষ্টি কুমড়া, ৯০ শতাংশে বেগুন, টমেটো ২০ শতাংশে, ঢ্যাঁড়স ৩০ শতাংশে, পুঁইশাক ৩০ শতাংশে, বরবটি ২৫ শতাংশে ও ২৫ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছেন।
আরমানের বাবা মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আগে জমিতে শুধু ধান চাষ করতাম। তখন সংসারে অভাব লেগেই থাকত। আরমান করোনাকালে সিদ্ধান্ত নেয় সবজি চাষের। এর পর থেকেই আমার ছেলেরা লেখাপড়ার পাশাপাশি সবজি চাষে সময় দেয়। এবার লাউ, টমেটো ও ফুলকপি চাষ করে লাভবান হয়েছি। লাউ ও মিষ্টি কুমড়ায় ভালো দাম পেয়েছি। লাখ টাকার মতো বিক্রি করেছি। এখন টমেটো ও ফুলকপির বাজারদর ভালো। সবজি চাষ করে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। এখন আর সংসারে অভাব নেই।’
মুহাম্মদ আরমান বলেন, ‘সবজি চাষ করে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। সবজি বিক্রি করে যা লাভ হয় তার থেকে পরিবারের সব খরচ মিটানোর পর কিছু টাকা সঞ্চয় করা যায়। কৃষি অফিসের মাধ্যমে সবজি চাষের ওপর বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমাদের এলাকায় দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চাষাবাদের জন্য পরামর্শের পাশাপাশি নতুন কোনো সবজির জাত এলে তা চাষ করতেও উদ্বুদ্ধ করেন।’
বেলাব উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘আধুনিক চাষাবাদ নিয়ে তাঁদের বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কৃষকেরা যেন কম খরচে ভালো ফলন পেতে পারেন তার জন্য বিভিন্ন রকমের প্রণোদনাও দেওয়া হয়।’