ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কাউন্টার থেকে টিকিট পাওয়া যায়নি। যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারে টিকিট থাকার পরও তা বিক্রি করা হচ্ছে কালোবাজারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাউন্টার ছাড়া ম্যানুয়ালি (হাতে লেখা) টিকিট অন্য কোথাও থেকে বিক্রি করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল সোমবার এমনই চিত্র দেখা গেছে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনে।
রেলের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান সিএনএসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সে জন্য ২৬ মার্চ থেকে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব নেবে নতুন প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’। সেই কারণে গত রোববার থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ আছে। তবে বুকিং সহকারীরা টিকিট বিক্রি করছেন ম্যানুয়ালি। ফলে টিকিট বিক্রি করতে অনেক বেশি সময় লাগছে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাত্রীদের এ ভোগান্তি পোহাতে হবে।
গতকাল সকাল ৮টায় টিকিট কাউন্টারে দেখা গেছে, যাত্রীরা টিকিটের জন্য দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন। সবচেয়ে বড় লাইন দেখা গেছে ঢাকাগামী বিভিন্ন ট্রেনের টিকিটের জন্য।
টিকিটপ্রত্যাশী আমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কাউন্টারে বুকিং সহকারীরা কাজ করছেন ধীর গতিতে। আবার কোনো কোনো বুকিং সহকারী কিছুক্ষণ পরপরই কাউন্টার থেকে অন্য কোথাও চলে যাচ্ছেন। কাউন্টার ফাঁকা পড়ে থাকছে। ফলে টিকিট পেতে সময় লাগছে বেশি।
নওগাঁ জেলা থেকে সকাল ৮টায় সময় টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর কাউন্টারের সামনে আসতে পেরেছি। কিন্তু কোনো টিকিট পাইনি। কারণ, কাউন্টার থেকে বলা হয়েছে টিকিট শেষ হয়ে গেছে।’
সাইদুর রহমান আরও জানান, কাউন্টার থাকার পরও টিকিট অন্য জায়গায় থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আরেক ট্রেনযাত্রী রোকনুজ্জামান রুকু বলেন, ‘ম্যানুয়ালি টিকিট কাউন্টারের আশপাশে বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টার লাইনে দাঁড়িয়েও কোনো টিকিট পাইনি। অবিলম্বে এসব টিকিট বিক্রেতাকে ধরে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
সান্তাহার রেলওয়ে নিরাপত্তার বাহিনীর পরিদর্শক নুর এ নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ম্যানুয়ালি টিকিট কাউন্টার ছাড়া অন্য কোথাও থেকে বিক্রি করা আইনত অপরাধ। এ রকম কোনো টিকিট কারও কাছে পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যাত্রীদের যেন কোনো দুর্ভোগ না হয়, সেই জন্য আমরা সব সময় দায়িত্ব পালন করছি।’
জানতে চাইলে সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ম্যানুয়ালি টিকিট হাতে লিখতে হচ্ছে। ফলে সময় একটু বেশি লাগছে। তবে টিকিট দিতে সময় বেশি লাগার কারণে যেন ভিড় বেশি না হয়, তার জন্য ট্রেন অনুযায়ী আমরা কাউন্টারগুলো ভাগ করেছি। কাউন্টারে ভিড় কম থাকবে সেই ব্যবস্থা করছি, আর যেন কোনো ট্রেনযাত্রী কষ্ট না পান। যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।’