ভাত নয়, শুধু রুটি খেয়েই ৫০ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের চা বিক্রেতা মো. দেলোয়ার হোসেন। ভাত খেতে ভালো লাগে না বলে জানিয়েছেন তিনি। আর এটিকে কোনো রোগ নয়, নিতান্তই অভ্যাস বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চরগড়পাড়া গ্রামের মৃত রহম আলীর বড় সন্তান দেলোয়ার হোসেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হকার্স মার্কেটে ছোট সময় থেকে তিনি চায়ের দোকান করেন। বাকি তিন ভাইও বিভিন্ন ব্যবসা করছেন।
দেলোয়ারের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে ১৯ জুলাই মাসে জন্ম গ্রহণ করেন দেলোয়ার হোসেন। দীর্ঘ সময় পরিবারে অভাব-অনটন থাকলেও এখন তা নেই। মা, বাবা, স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে চলছে দেলোয়ারের সংসার। তাঁর মা টগর বেগম জানান, দেলোয়ারের জন্মের সাত মাস পর থেকে ভাত খান না। যখন সাত মাস বয়স হয় তখন তাঁকে বাড়তি খাবার হিসেবে ভাত, মাছ মুখে দিলেই বমি করে ফেলে দিতেন। কোনোভাবে একটু ভাত পেটে গেলেই অজ্ঞান হয়ে পড়তেন।
টগর বেগম বলেন, পরে দেলোয়ারের ভাত না খাওয়া নিয়ে গ্রামের কবিরাজদের কাছে গেলে তাঁরা তাঁকে ভাত না খাইয়ে রুটি খাওয়াতে পরামর্শ দেন। এ পরামর্শ অনুযায়ী দেলোয়ারকে ভাতের পরিবর্তে রুটি ও সবজি দেওয়া হতো। এর পর থেকে রুটি খেয়েই চলছে দেলোয়ারের জীবন।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভাত আমার ভালো লাগে না। বড় হওয়ার পর মুখে অনেকবার ভাত নিতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভাত মুখে গেলেই বমি চলে আসে। ভাতের চেয়ে তিনবেলা রুটি খেতে ভালো লাগে।’
দেলোয়ার বলেন, ভাত খেতে পারেন না বলে কোথাও দাওয়াত খেতে যান না। যদিও কোনো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যেতে হয়, তাহলে তাঁর জন্য রুটি বানাতে হয়।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের সাবেক আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) লুৎফর রহমান বলেন, ভাত, মাছ না খাওয়া কোনো রোগের লক্ষণ নয়। ছোট সময় থেকে অভ্যাস না থাকায় দেলোয়ার হোসেন ভাতের মতো মজার খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।