শীতের আগমনে বাড়ছে শিল্পীদের ব্যস্ততা। মৌসুম শুরুর প্রস্তুতিতে নিশ্বাস ফেলার সময় নেই— এসব কথাই শুনব ভেবেছিলাম। কিন্তু রাহুল আনন্দ শোনালেন ভিন্ন কথা। সংক্ষেপে বলে দিলেন, শো আর আগের মতো নেই। কিন্তু দলগুলোর প্রস্তুতি আছে ষোলো আনা। বিষয় কী? রাহুল আনন্দ জানালেন, করোনা অতিমারি আর বৈশ্বিক মন্দার থাবা পড়েছে শিল্পেও। করোনা-পরবর্তী পৃথিবীতে অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু সব জায়গায় মানুষ সফল হয়নি বলেই রাহুল আনন্দের ধারণা। সে ব্যর্থতার ছিটেফোঁটা পড়েছে বিভিন্ন জায়গার মতো সংগীতাঙ্গনেও।
তাহলে জলের গানের ব্যস্ততা কী নিয়ে—রাহুল আনন্দের সঙ্গে কথা হলে এ প্রশ্ন অবধারিত। তিনি জানালেন, গান তৈরি হচ্ছে। প্রায় ছয়টি নতুন ট্র্যাক তৈরি হয়েছে, যেগুলো এখনি কনসার্টে গাওয়া সম্ভব। আরও কয়েকটির কাজ চলছে। যেহেতু এখন আর অ্যালবাম তৈরির তাড়া বা উন্মাদনা কোনোটাই নেই, তাই ধীর লয়ে এগোচ্ছে সব। অ্যালবামের যুগ যেহেতু নেই তাহলে গান কি এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মনির্ভর হয়ে যাবে বা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে?
সে ভাবনা প্রযুক্তির মানুষদের—জানালেন রাহুল আনন্দ। ক্যাসেট বা সিডি সবই ছিল ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়ার অংশ বা একেকটা টুল। ‘ভবিষ্যতের প্রযুক্তিবিদেরা কী তৈরি করবেন, সেটা নিয়ে তাঁরাই ভালো জানেন। আমাদের কাজ গান গাওয়া। সেটাই করার চেষ্টা করছি।’ বলেন রাহুল আনন্দ।
কথা এগিয়ে যেতে থাকে। একসময় মনে হয়, আজ ১৫ নভেম্বর কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী বারী সিদ্দিকীর জন্মদিন। সংগতভাবে কথা ঘুরে যায় সে দিকে। বিভিন্ন আড্ডায় বহুবার শোনা হয়েছে, বারী সিদ্দিকীর কাছে বাঁশি শিখেছেন রাহুল আনন্দ। সে কথার সূত্রে আমরা ভেসে যাই তাঁর স্মৃতির অমল ধবল পালে। আপ্লুত হয়ে পড়েন রাহুল আনন্দ। অকপটে জানান, শুধু বাঁশি নয়, বারী সিদ্দিকীর কাছে তিনি একটা জীবন পেয়েছেন। সংগীত বিষয়ে তাঁর যা অর্জন সেটা বারী সিদ্দিকীর জন্যই বলে মনে করেন রাহুল। বাঁশি তাঁর একটি অংশ মাত্র। কোন বাঁশে কেমন বাঁশি হবে, কেমন বাঁশি দরকার, সেগুলোর আদ্যোপান্ত জেনেছেন বারী সিদ্দিকীর কাছে। রাহুল আনন্দ জানালেন, সেসব বিষয়ে বারী সিদ্দিকী সব সময় অনুপ্রাণিত করে গেছেন।