ফেরিতে গত পরশু সমুদ্রযাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়া নাসুম আহমেদের একটু ভালো লাগতে শুরু করে ডমিনিকার খুব কাছাকাছি এসে গেলে। তখন সতীর্থদের কাছে তিনি জানতে চাইলেন, কারও কাছে ‘পান’ হবে কি না! সিলেটের ছেলে নাসুম পান খেতে খুব পছন্দ করেন।
নাসুমের মতো ভয়ংকর সমুদ্রযাত্রার দ্রুতই ধকল কাটিয়ে উঠেছেন দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ই। গতকাল সকালে টিম হোটেলের নাশতার টেবিলে ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খানের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখা গেল শরীফুল ইসলামের। তরুণ বাঁহাতি পেসারও আক্রান্ত ‘মোশন বা সি সিকনেসে’। পরশু সমুদ্রযাত্রায় শরীফুলও অনেক বমি করেছেন। তিনি যে অনেকটা অসুস্থ, সেটি বোঝা গেল আতহার আলী খানের বার্তায়, ‘শরীফুল পুরোপুরি ঠিক আছে।’
ধকল কাটিয়ে বাংলাদেশের চোখ এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজে। গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় অনুশীলনে নেমে পড়ার কথা ছিল তাদের। আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টা থেকে ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে অবশ্য মাহমুদউল্লাহদের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। সেন্ট লুসিয়ায় দুই দিন আর ডমিনিকায় গতকালই অনুশীলন করার সুযোগ মিলেছিল তাঁদের। সেটিতে বাগড়া দিল বৃষ্টি ৷ সমুদ্রযাত্রার ধকল তো ছিলই।
এমনিতে বাংলাদেশের এবারের উইন্ডিজ সফরের শুরুটা হয়েছে হতাশার। ব্যাটিং-ফিল্ডিং দুই বিভাগের ব্যর্থতায় টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছে বাংলাদেশ। তবে ২০১৮ সালের সফরটা অনুপ্রাণিত করতে পারে সাকিবদের। চার বছর আগের উইন্ডিজ সফরের শুরুতে বাজেভাবে টেস্ট হারের পর সাদা বলের দুই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার অবশ্য প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন শুধু ভয়ংকর সমুদ্রযাত্রার কারণেই নয়। দলে এসেছে অনেক পরিবর্তন। গতবার টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান। এবার সেটি মাহমুদউল্লাহর কাঁধে।
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত হয়নি। মাঠে এলেও ঠিকঠাক অনুশীলন করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের প্রস্তুতি ও কন্ডিশন সম্পর্কে কোনো ধারণা না পাওয়ার কথাই বললেন, ‘আজকে (গতকাল) কন্ডিশন আমাদের সুযোগ দেয়নি অনুশীলনের। কারণ, বৃষ্টি পড়েছে, আমরা সবে ভ্রমণ করে এলাম। তার আগে আমরা সেন্ট লুসিয়াতে ফুটবল খেলে উপভোগ করেছি। ৪০ মিনিটের ফিল্ডিং সেশন করেছি। মানসিকভাবে আমাদের ওভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। কালকে (আজ) মাঠে যখন আসব, কন্ডিশন কেমন হয় দেখা যাবে। আমরা যদি মানসিকভাবে তৈরি থাকতে পারি। ম্যাচ খেলতে আমাদের সম্ভাব্য এটাই সেরা উপায়।’
সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে আজ যদি ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে খেলা ঠিকঠাক মাঠে গড়ায়, তবে পাঁচ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ মাঠে ফিরবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। আর ২০ ওভারের ক্রিকেট ফিরবে আট বছর পর। এখানে বাংলাদেশের কিছু সুখস্মৃতি আছে। ২০০৯ সালে এই মাঠে হওয়া দুটি ওয়ানডেতেই জিতেছিল বাংলাদেশ। ১৩ বছর আগে যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই এবার বাংলাদেশ শুরু করতে পারলেই হয়।