দৃষ্টি প্রতিবন্ধী চয়ন তালুকদার। সে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।
চয়ন তালুকদার উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের নিতাই তালুকদারের ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শেষে চয়ন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার বেশ আগ্রহ ছিল। দুই চোখ অন্ধ থাকায় তার পড়ালেখা অনিশ্চিত ছিল। ছোট বোন যখন পড়তে বসত তখন তার পাশে বসে শুনে সে পড়া মুখস্থ করত।
পরে সে পড়া বলত অন্যজন লিখে দিত। এভাবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়।
কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় শ্রুতি লেখন পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাকে শ্রুতি লেখনে সহায়তা করেন বন্ধু মাজহারুল ইসলাম। মাজারুল ইসলাম এসএসসি পরীক্ষার সময়ও শ্রুতি লেখনের দায়িত্ব নেয়।
চয়নের শ্রুতি লেখন মাজহারুল ইসলাম বলে, ‘চয়ন বলে দেয় আমি শুধু খাতায় লিখে দিই। এতে আমাদের কোনো অসুবিধা হয় না।’
চয়নের বাবা নিতাই তালুকদার বলেন, ‘জন্মগত ভাবেই চয়নের দুই চোখ অন্ধ। তবে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় তার আগ্রহ ছিল। ভাইবোন মিলে একসঙ্গে পড়ালেখা করে এবার দুজন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। অভাব অনটনের কারণে ঠিকমতো তাদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারছি না’
জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চয়নকে শিক্ষা বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখনের অনুমতি এনে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁর সফলতা কামনা করছি।’