নান্দাইলে ইউপি নির্বাচনে ভোট কারচুপি, ফলাফল জালিয়াতি ও প্রশাসনিকভাবে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন এক সদস্য প্রার্থী। উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়। মোরগ প্রতীকের সদস্য পদ প্রার্থী মো. আব্দুল কদ্দুস মুন্সির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর ছেলে ও কেন্দ্রে দায়িত্ব থাকা এজেন্ট মো. আহসান উল্লাহ হাসান।
লিখিত বক্তব্যে আহসান উল্লাহ বলেন, গত ৫ জানুয়ারি বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সারা দিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। পরে ভোট গণনার সময় আমাদের চারজন এজেন্টের মধ্যে দুজনকে বের করে দেওয়া হয়। গণনার পর মোরগ প্রতীকের ব্যালটের সংখ্যা বাকি দুই প্রার্থীর প্রায় সমান দেখা গেছে। তখন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুট করে ৭ ভোটের ব্যবধানে আব্দুল কুদ্দুসকে পরাজিত দেখান।
এর প্রতিবাদ করে পুনরায় ভোট গণনার আবেদন করলে তাঁরা আশ্বাস দিলেও ভয় দেখিয়ে ব্যালট বাক্স নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন আহসান উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এ সময় আমি বাধা দিলে আমাকে দোতলা থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির পাশাপাশি বেঁধে রাখার নির্দেশ দেন। ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার সময় একটি ফলাফল শিট কেন্দ্রে ফেলে রেখে যান। এতে আমাদের এজেন্টের স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি।’
আহসান উল্লাহ আরও বলেন, ‘কেন্দ্রে মোট ভোটারের চেয়ে ২০০ ভোট বেশি কাস্টিং দেখানো হয়েছে। এতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, ভোট জালিয়াতিতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সব দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জড়িত। কেন্দ্রে মোট ভোট ৩ হাজার ৩৮৯ টি। কাস্টিং ভোট ২ হাজার ৬৯৩ জন। তিন প্রার্থী মোট ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৪৯৩টি এবং বাতিল ২০০ টি। অনুপস্থিত ভোটার ৮৯৬ জন। সেই হিসেবে মোট ভোট আসে ৩ হাজার ৫৮৯, যা মোট ভোটের চেয়ে ২০০ বেশি।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এস এম উসমান গণি ফাহিম, খলিলুর রহমান, রতন মিয়া, আলী নেওয়াজ প্রমুখ। এ সময় বক্তারা পুনরায় ভোট গণনা করে নির্বাচিত প্রার্থীর নাম ঘোষণার দাবি জানান।
প্রার্থী আব্দুল কদ্দুস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এ বিষয়ে খারুয়া ও আচারগাঁও ইউপির রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘শিটে যে ফলাফল তা ঠিক আছে। তবে অনেকেই অভিযোগ করেছে। তাঁদের অভিযোগের বিষয়টি আমার দেখতে হবে।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ.ফখরুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। রিটানিং কর্মকর্তা বলতে পারবেন।’