চারদিকে এখন বন্যার পানি। চলছে দেশি মাছ ধরার ধুম। স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে গেছে মাছ শিকারের চাঁইয়ের চাহিদা। নাটোরের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় হাটে বাঁশের এই সরঞ্জামের জমজমাট ব্যবসা চলছে।
চাঁচকৈড় হাটের চাঁই গুরুদাসপুরসহ পাশের সিংড়া, তাড়াশ ও বড়াইগ্রাম উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন চাঁই তৈরির কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার ধারাবাড়িষা ইউনিয়নের তালবাড়িয়া, খাকরাদহ, উদবাড়িয়া ও চরকাদহ এবং শিধুলী বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ী বিলহরিবাড়ি ও চামটা রানীনগর এলাকায় চাঁই তৈরি হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গুরুদাসপুর উপজেলায় প্রায় ৫০০ পরিবার চাঁই তৈরি করে। চাঁচকৈড়ে প্রতি হাটে ১০ থেকে ১৩ লাখ টাকার চাঁই বেচাকেনা হয়। প্রতি জোড়ার দাম ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা।
তালবাড়িয়া গ্রামের চাঁইয়ের কারিগর আরশেদ প্রামাণিক বলেন, ‘প্রতিদিন ৩টি করে চাঁই তৈরি করি। প্রতি শনিবার ১২ থেকে ১৩টি এবং মঙ্গলবার ৮টি চাঁই হাটে আনি। প্রতি সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার বিক্রি করি। এতে আমাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যায়। আমার পরিবারে পাঁচ সদস্য। সবাই চাঁই তৈরি করতে পারেন। এটি তৈরি করে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।’
শিধুলী গ্রামের মিন্টু সরদার প্রতি সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩০টি চাঁই চাঁচকৈড় হাটে নিয়ে আসেন। তিনি জানান, এখন ভালো দাম পাচ্ছেন। তবে চাঁই তৈরির সরঞ্জামের দাম একটু বেশি। তাই চাঁইয়ের দাম আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো।
চাঁচকৈড় হাট থেকে প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন লাখ টাকার চাঁই কিনে ঢাকা, সিলেট, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে পাঠান তালবাড়িয়ার ব্যবসায়ী শামীম আহম্মেদ। সেখানে তিনি এগুলো পাইকারিভাবে বিক্রি করেন।
শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘দাম এবার ভালো আছে। চাহিদা বাড়লে দাম বেশি হয়। এখন চাহিদা বাড়ছে। পানি যত দিন থাকবে, চাঁইয়ের চাহিদা বাড়বে। এবার প্রকৃতিতে মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে, তাই চাঁইয়ের চাহিদা বাড়ছে। প্রথম দিকে লকডাউন ও পানি কম থাকার কারণে চাহিদা কম ছিল। সেটা এখন পুষিয়ে নিতে পারব।’