গর্ভেশ্বরী নদী পারাপারে কোনো সেতু না থাকায় দুর্ভোগে ছিলেন হাজারো মানুষ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের আগেই সেতুটি ২০১৭ সালের বন্যায় মাঝখানে ধসে যায়। পাঁচ বছর ধরে সেভাবেই পড়ে আছে সেতুটি।
জানা গেছে, ধরধরিয়া হাড়গাঁও বাবুর বাজার থেকে ঝাড়ুয়াপাড়ায় শীতকালে চলাচল করা গেলেও বর্ষাকালে ভোগান্তিতে পড়তে হয় এ এলাকার বাসিন্দাদের। এ সময়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয় কয়েক কিলোমিটার এলাকা ঘুরে আত্রাই নদীর বাঁধের ওপর দিয়ে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা ছিলেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার। নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন এলাকার মানুষ।
রামডুবিহাট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরমাল আলী জানান, ২০১৭ সালে বন্যার সময় উদ্বোধনের আগেই ব্রিজটি ধসে যায়। নদীর ওপারে কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। বর্ষায় তাঁদের অনেক দূর ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।
বেগুন তাড়াপাড়ার ভ্যানচালক আজগার আলী (৫৫) বলেন, ‘ব্রিজটি উদ্বোধন হওয়ার আগের দিন রাতে বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে। ভেঙে যাওয়ার পাঁচ বছর হয়ে গেল; কিন্তু নতুন করে আর ব্রিজটি হলো না। নদীর দুই পারের মানুষের কী পরিমাণ কষ্ট তা বলে বোঝানো যাবে না। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সঙ্গে এই ব্রিজটি নিয়ে গ্রামের মানুষের ঝগড়া-বিবাদ হয়ে গেছে।’
পরেশ ডাক্তারপাড়ার প্রমীলা রানী (৩৭) বলেন, ‘ব্রিজের জন্য হামার কষ্ট কেহ দেখে না। বর্ষার সময় মহিলা, অসুস্থ মানুষ নিয়া হামার বিপদের শেষ থাকে না। হামার একটায় দাবি, ব্রিজটা তাড়াতাড়ি ঠিক করি দেউক।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দীন জানান, ব্রিজটি ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময় সারা দেশে শতশত ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একাধিকবার তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজটি পরিদর্শন করেছেন। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।