হোম > ছাপা সংস্করণ

যিনি মালি, তিনিই ফার্মাসিস্ট!

শরিফুল রহমান তুষার, যার নিয়োগ মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফুল বাগানের মালি পদে। কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ফার্মাসিস্ট হিসেবে।

তিনি চিকিৎসকদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র দেখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগীদের মাঝে সরকারি ওষুধ বিতরণ করছেন।

মালি হয়েও তুষার কীভাবে ওষুধ সরবরাহের কাজ করছেন, বিষয়টি জানেন না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অনুপ বসু বলেন, ‘লোকবল সংকটের কারণে মালির কাজ সেরে অন্য সময়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মেসিতে বসেন তুষার।’

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মেসির দুটি চেয়ারের মধ্যে একটিতে বসে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেখে ওষুধ দিচ্ছেন তুষার। অপর চেয়ারটি খালি পড়ে আছে। ভেতরের অন্য একটি কক্ষে বসে কৌশিক দাস নামে একজন লেখালিখির কাজ করছেন। মূলত এই কৌশিক হচ্ছেন ফার্মাসিস্ট।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে তুষারকে ওষুধ দিতে দেখে তাঁর কাছে পরিচয় জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। কোনো তথ্য না দিয়ে তিনি এ প্রতিবেদকের ওপর ক্ষেপে ওঠেন।

তুষার বলেন, ‘আমি এখানে উড়ে আসিনি। আমার ব্যাপারে টিএইচওকে (উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) জিজ্ঞেস করেন।’

তুষারের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে ভেতরের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন ফার্মাসিস্ট কৌশিক দাস। তিনি বলেন, ‘লোক কম থাকায় আমি তাঁকে (তুষার) এখানে রেখেছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফার্মাসিস্টের দুটি পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন মহিতোষ দাস ও কৌশিক দাস। এ হাসপাতালে স্টোর কিপারের পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ওষুধ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গুদাম রক্ষক (স্টোর কিপার) সাইফুল ইসলামের বদলি হয়েছে প্রায় ৭ বছর আগে। তখন থেকে এ পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, স্টোর কিপারের পদ খালি থাকায় সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফার্মাসিস্ট মহিতোষ দাসকে। যক্ষ্মা রোগীদের তথ্য সংগ্রহ ও প্রদানের জন্য টিএলসিএ’র (টিবি অ্যান্ড লেপ্রোসি কন্ট্রোল অ্যাসিস্ট্যান্ট) পদ খালি রয়েছে। তার দায়িত্বেও রয়েছেন এই মহিতোষ দাস। তিনি গুরুত্বপূর্ণ দুটো পদে কাজ করায় ফার্মেসিতে সময় দিতে পারেন না।

মহিতোষ দাস বলেন, ‘স্টোর কিপারের দুই ধাপ ওপরের পদ ফার্মাসিস্ট। সেখানে নিয়োগ আমার। হাসপাতালে সময় মতো আসব। রোগীদের ওষুধ দেব। এর পর ডিউটির সময় শেষ হয়ে গেলে চলে যাব। কিন্তু এখন স্টোর কিপার ও টিএলসিএ’র কাজ করতে গিয়ে খুব চাপ পড়ছে। আবার মাঝে মধ্যে ফার্মেসিতে সময় দেওয়া লাগে। একজন হয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদের কাজ সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য তুষার ফার্মেসিতে কাজ করছেন।’

মহিতোষ বলেন, ‘মালি হলেও সমস্যা না। তুষার শিক্ষিত ছেলে। তিনি ওষুধ দেওয়ার কাজ বোঝেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা অনুপ বসু বলেন, ‘লোকবল সংকটের কারণে মালির কাজ সেরে অন্য সময়ে ফার্মেসিতে কাজ করেন তুষার। করোনার সময়ও তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন।’

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘স্টোর কিপার ও টিএলসিএর পদ খালি থাকায় ফার্মাসিস্ট মহিতোষ সেখানে দায়িত্বে আছেন। ফার্মেসিতে মহিতোষের পরিবর্তে তুষার সহযোগিতা করছেন। তিনি রোগীদের ওষুধ দেওয়ার কথা না। আমি নতুন এসেছি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ