হোম > ছাপা সংস্করণ

সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না পণ্য

আয়নাল হোসেন ও সাইফুল মাসুম, ঢাকা

দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক দামে দেশের সব শ্রেণি-পেশার ভোক্তারই এখন নাভিশ্বাস। আমদানিকৃত থেকে শুরু করে দেশীয় উৎপাদিত কোনো পণ্যেই ভোক্তার স্বস্তি নেই। এমন পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার ২৯টি কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দেয় সরকার। কিন্তু পরের দিনই গতকাল শনিবার বাজারে গিয়ে সরকার-নির্ধারিত দামে কোনো পণ্য বিক্রি হতে দেখা যায়নি। 

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা ৪০ পয়সায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। একইভাবে কাঁচা মরিচ,বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, দেশি রসুন, আমদানিকৃত আদা ও আলুর দামেও বড় পার্থক্য রয়েছে।   

গরুর মাংসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৬৬৪ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা দরে। রাজধানীর সিপাহিবাগ এলাকার জুয়েল গোশত ঘরে ৭৮০ টাকা দামে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে গতকাল। একই দরে পলাশী বাজারেও মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। 

খুচরা পর্যায়ে গতকাল প্রতি কেজি খেসারির ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। যদিও সরকার-নিধারিত দাম ছিল ৯২ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির সরকার-নির্ধারিত দাম ১৭৫ টাকা। গতকাল সেই মুরগি রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও পলাশী কাঁচাবাজারে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। কাতল মাছের খুচরা দাম সর্বোচ্চ ৩৫৪ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু বাজারে বিক্রি হয়েছে কেজি ৪০০ টাকায়। প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। টমেটোর খুচরা মূল্য ৪০ টাকা বলা হলেও বাজারে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

রোজায় ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ জাহিদি খেজুরের কেজি সর্বোচ্চ ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়। পলাশী বাজারের ফল ব্যবসায়ী মোর্শেদ বলেন, ‘পাইকারিতে এই খেজুর কেনা পড়েছে ৩০০ টাকার বেশি। সরকার মুখস্থ দাম বেঁধে দিলে তো হবে না।’

বেশি দামে পণ্য বিক্রির বিষয়ে কারওয়ান বাজারের সুমাইয়া জেনারেল স্টোরের মো. মানিক বলেন, পাইকারি থেকে খেসারির ডাল ১২৫ টাকায় কেনা। বাজার যাচাই না করে খেয়ালখুশি মতো দাম বেঁধে দিলে তো হবে না।  

জানতে চাইলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার আগে তিন মাস ধরে আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করেছেন। এখানে বৈজ্ঞানিক পন্থা অবলম্ব করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। উচ্চ পচনশীল পণ্যে ৩০-৪০ শতাংশ মুনাফা দেওয়া হয়েছে।’ 

বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে বাজারে মিল না পাওয়ার বিষয়ে মাসুদ করিম বলেন, মাত্র সার্কুলার দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হতে সময় লাগবে। কেউ অমান্য করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। একই অপরাধ পুনরায় করলে দ্বিগুণ অর্থ ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।      

বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। যদিও সরকার-নির্ধারিত সর্বোচ্চ দাম ৬০ টাকা। আলুর দাম ২৮ টাকা নির্ধারণ করলেও বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আলু উৎপাদনকারী ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি এলাকার কৃষক সাহানোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে তাঁর ১৭ টাকা ৫০ পয়সা খরচ হয়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কোনোমতেই যৌক্তিক হয়নি। পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার মথুয়াপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি মামুনুর রহমান বলেন, কৃষক পর্যায়ে দাম যৌক্তিক হয়নি।

তবে পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, নির্ধারিত দামে পণ্য পাওয়া গেলে ভোক্তাদের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসবে। তবে সরবরাহ ব্যবস্থাকে উন্নতি করতে হবে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের কাজ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের। এরপরও বিষয়টি আমরা তদারক করে দেখব।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ